জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ভাষণ চলাকালে শুক্রবার নিউইয়র্কে বেশ কিছু প্রতিনিধি হল ত্যাগ করেন। এতে সম্মেলন কক্ষের বড় অংশ খালি হয়ে যায়।
জাতিসংঘের বাইরে একই সময়ে টাইমস স্কয়ারে গাজা যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভকারীরা জড়ো হন। ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে আন্তর্জাতিক ক্ষোভ বাড়ছে। এ প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
ভাষণে নেতানিয়াহু এই স্বীকৃতিকে “লজ্জার দাগ” আখ্যা দিয়ে বলেন, এতে “ইহুদি হত্যা লাভজনক” বার্তা দেওয়া হয়েছে। তিনি স্পষ্ট করেন, ইসরায়েল কখনও ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের অনুমতি দেবে না এবং দাবি করেন ইসরায়েলের বিপুল সংখ্যক নাগরিক এই অবস্থানকে সমর্থন করে।
জাতিসংঘের এক তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে গাজায় ইসরায়েল গণহত্যা চালিয়েছে বলে যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়, নেতানিয়াহু তা “ভিত্তিহীন” দাবি করে খারিজ করেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে গাজায় ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিচ্ছে জাতিসংঘ সংস্থাগুলোর এমন অভিযোগও সত্য নয়। যদিও জাতিসংঘ সমর্থিত একটি সংস্থা আগস্টে জানিয়েছিল, গাজা সিটিতে দুর্ভিক্ষ চলছে।
ভাষণের বাইরে নিউইয়র্কে কয়েকটি আলাদা বিক্ষোভ হয়। জাতিসংঘ সদর দফতরের বাইরে গাজায় আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের পরিবার তাৎক্ষণিক মুক্তির দাবি জানায়। হোস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিস ফোরামের ভাষ্য অনুযায়ী, তারা যুদ্ধ শেষ করার আহ্বানও জানান।
টাইমস স্কয়ারে CODEPINK সংগঠনের নেতৃত্বে বড় সমাবেশে “ফ্রি, ফ্রি প্যালেস্টাইন” স্লোগান দিয়ে অংশগ্রহণকারীরা মিছিল করে জাতিসংঘের দিকে অগ্রসর হন। সকালে নিউজ কর্পোরেশন ভবনের সামনেও আরেকটি বিক্ষোভ হয়, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ইসরায়েলি-আমেরিকান এবং আমেরিকান ইহুদিরা যুদ্ধ বন্ধের দাবি জানান।
ভাষণের শুরুতে নেতানিয়াহু একটি মানচিত্র দেখান, যার নাম দেন “দ্য কার্স”। তিনি দাবি করেন, মানচিত্রে ইরানি মদদপুষ্ট গোষ্ঠীগুলোর অবস্থান চিহ্নিত রয়েছে। গত এক বছরে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের উল্লেখ করে তিনি লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হুতি, গাজার হামাস ও ইরানের কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান ইরানের ফোর্দো পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার জন্য এবং হামাসের ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে ৯/১১ হামলার তুলনা করেন। নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র একই শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করছে।