বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে আয়োজিত “জুলাই ফটো এক্সিবিশনে” এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “কত গ্রেনেড ফাটুক, কত ককটেল বিস্ফোরণ হোক না কেন, জনগণকে নাগরিক পার্টি থেকে আলাদা করা যাবে না।”
আখতার হোসেন বলেন, “আমরা সেই মানুষ, যারা সরাসরি গুলি খেয়েও রাস্তায় দাঁড়িয়ে একনায়ক হাসিনার শাসনব্যবস্থাকে উপড়ে ফেলেছি। শহীদ হয়েছি, তবু পিছু হটিনি।”
আন্দোলনের সময় নিহতদের স্মরণ করে তিনি বলেন, “আমাদের সহযোদ্ধারা শহীদ হয়েছেন, তবু আমরা যারা বেঁচে আছি তারা বুক চিতিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়েছি। সেই শক্তিতেই আমরা এগিয়ে যাব।”
তিনি বলেন, “যেভাবে জনগণ ধ্বংসস্তূপ থেকে নতুন বাংলাদেশ গড়ার শপথ নিয়েছে, সেভাবেই আমাদের বহরে হামলা বা তথ্যভ্যান ধ্বংস আমাদের আটকে রাখতে পারবে না।”
আখতার হোসেন বিচারপ্রক্রিয়ার ধীরগতিতে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “এত সময় পার হয়ে গেলেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়েনি, চার্জশিট হয়নি, মামলাগুলো কার্যকর হয়নি।”
তিনি অভিযোগ করেন, “আওয়ামী লীগের যেসব শীর্ষ সন্ত্রাসীরা আন্দোলনের সময় আমাদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছে, যারা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে, তারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।”
আখতার বলেন, “আমরা সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, আপনি এখন পরবর্তী সরকারের দায়িত্বে। প্রশাসনে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে যারা আওয়ামী লীগের সহযোগী হিসেবে রয়ে গেছে, তাদের খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেওয়া আপনার দায়িত্ব।”
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সব সফল প্রতিফাসিস্ট দলকে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি জুলাইয়ের বার্তাকে ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। সমাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলোকে নিয়ে নানা কর্মসূচি হাতে নেওয়া দরকার।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ যে শক্তি ও প্রেরণায় জুলাই মাসে এক হয়েছিল, সেই শক্তিতেই আমরা এগিয়ে যাব—গঠন করব একটি নতুন বাংলাদেশ, যা হবে গণতন্ত্র ও মৌলিক সংস্কারভিত্তিক।”
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, “গত ১০ মাসে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা শহীদ পরিবারদের হয়রানি করেছে, শহীদের কবরস্থানে হামলা চালিয়েছে এবং আহতদের ওপর হামলা করেছে।”
তিনি জানান, “ঢাকার বাইরেও, বিশেষ করে কুমিল্লা সহ অন্যান্য জায়গায় যারা আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন, তাদের ওপর হামলা হয়েছে।”
তার মতে, “নাগরিক পার্টি যেহেতু আন্দোলন থেকে জন্ম নিয়েছে এবং সেই চেতনা ধারণ করে এগোচ্ছে, তাই এখন রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে তাদের পথ আটকে দিতে এসব হামলা চালানো হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, যারা মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে আন্দোলনে নেমেছিল, তারাই সেই ফ্যাসিস্ট ঘাতককে দেশছাড়া করেছে।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নাল আবেদিন শিশির ও এস এম সাইফ মুস্তাফিজ।