জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রস্তাবিত পুনর্গঠন নিয়ে চলমান সংকট নিরসনে অর্থ উপদেষ্টার আলোচনার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।
বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের সভাপতি ও অতিরিক্ত কমিশনার হাসান মোহাম্মদ তারেক রিকাবদার লিখিত বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, সরকার এখনো এনবিআর পুনর্গঠনের পরিকল্পনা বাতিল করেনি এবং এটিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি স্বায়ত্তশাসিত ও বিশেষায়িত বিভাগ হিসেবে গড়ে তোলার পূর্ব প্রতিশ্রুতি থেকেও সরে এসেছে।
তারেক রিকাবদার বলেন, “বৃহস্পতিবারের আলোচনায় আমাদের কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, তাই ঐক্য পরিষদের কেউ অংশ নেবে না।”
সংগঠনটি তাদের একদফা দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছে—বর্তমান এনবিআর চেয়ারম্যানের অবিলম্বে অপসারণ।
তারা অভিযোগ করেছে, বর্তমান চেয়ারম্যান ৪৪ জন আমলার একটি তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছেন, যাদের মধ্যে ছয়জনকে ইতোমধ্যে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ সরকারের “ফ্যাসিবাদী এজেন্ডা” বাস্তবায়নে জড়িত ছিলেন।
সংগঠনটি দাবি করেছে, “রাজস্ব ব্যবস্থার অর্থবহ সংস্কার শুরু হতে পারে বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণের মাধ্যমে।”
পরিষদ তাদের পরবর্তী কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে।
আগামী ২৬ জুন দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এনবিআরের সব অফিসে কলম বিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালিত হবে। তবে আন্তর্জাতিক যাত্রী ও রপ্তানি সংশ্লিষ্ট সেবা এর আওতামুক্ত থাকবে।
এছাড়া, ২৭ জুনের মধ্যে চেয়ারম্যান অপসারণ করা না হলে ২৮ জুন থেকে কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু হবে বলে জানানো হয়।
২৮ জুন থেকেই দেশজুড়ে কর অফিস থেকে “এনবিআর অভিমুখে পদযাত্রা” কর্মসূচি শুরু হবে, যেখানে পুনর্গঠন পরিকল্পনা বাতিল ও স্থায়ী সংস্কারের দাবি জানানো হবে।
পরিষদের বিবৃতিতে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়, “পরিষদের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে—তা তিনি যেকোনো পর্যায়েরই হোন—বলপ্রয়োগে অবসর, বদলি, পদাবনতি বা কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলে কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের হাজার হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী একযোগে প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন।”
এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে এনবিআর সংস্কার নিয়ে চলমান অস্থিরতা আরও ঘনীভূত হলো। এখন নজর থাকবে সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।