কুমিল্লা, ২৬ মে, ২০২৫ (ডেপ্রবা) : বাংলাদেশের তরুণ সমাজ আবারও তাদের প্রতিরোধের ভাষা হিসেবে ফিরছে কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখায়। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সময় লেখা কবিতাগুলো এখন হয়ে উঠেছে বর্তমানের রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনের প্রেরণা।
কুমিল্লায় ২৫ মে (রবিবার) নজরুল জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা Mostofa Sarwar Farooki বলেন, “যে লেখাগুলো নজরুল স্বাধীনতার জন্য লিখেছিলেন, তা আজকের বাংলাদেশে তরুণদের স্বকীয়তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার আন্দোলনের ভাষা হয়ে উঠেছে। এটাই শিল্পের শক্তি।”
এই প্রসঙ্গে উঠে আসে বুয়েটের ছাত্র আব্রার ফাহাদের নাম। ২০১৯ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি রাজনৈতিক পোস্ট দেওয়ার পর ছাত্র সংগঠনের হাতে প্রাণ হারান এই মেধাবী তরুণ। বক্তা বলেন, “আব্রার একজন ভ্যানগার্ড। তিনি জীবন দিয়েছেন স্বাধীন দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রয়োজনে। তাই তাকে স্বাধীনতা পদক দেওয়া যুক্তিসঙ্গত।”
ফারুকী স্মরণ করিয়ে দেন, “মুক্তিযুদ্ধ কেবল অস্ত্র হাতে যুদ্ধ নয়, এটি একটি ধারাবাহিক সংগ্রাম। যারা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জীবন দেয়, তারা প্রত্যেকেই স্বাধীনতার প্রকৃত যোদ্ধা।”
২০২৪ সালে কোটাবিরোধী আন্দোলন আবারও দেখিয়েছে, তরুণরা এখন আর কেবল চাকরির দাবিতে রাস্তায় নামছে না। তারা প্রশ্ন তুলছে রাষ্ট্রের ভিত, নাগরিক অধিকার এবং স্বাধীনতা নিয়ে। বক্তার ভাষায়, “এই আন্দোলনে আব্রার ফাহাদ ছিল না শুধু একটি নাম, ছিল একেকটি বুকে লুকানো একেকটি প্রতিবাদ।”
নজরুলের সাহিত্য যে সময় বদলালেও প্রাসঙ্গিকতা হারায় না, তার প্রমাণ এই প্রজন্মের প্রতিবাদী তরুণরা। বক্তা বলেন, “কবে কোন সৃষ্টিশীল লেখা আবার প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠবে, তা কেউ জানে না। কিন্তু যখন সেটা হয়, তখন সমাজ বদলায়। এটি শিল্পের সৌন্দর্য।”
অতীতের মতো ভবিষ্যতেও যদি দেশের সার্বভৌমত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হয়, বক্তার বিশ্বাস, “আবার আসবে কোনো আব্রার, যে নিজের জীবন দেবে আর স্বাধীনতার গল্পকে আবারও জাগিয়ে তুলবে।”
নজরুলের বিপ্লবী চেতনা এবং আব্রার ফাহাদের আত্মত্যাগ—এই দুইয়ের মেলবন্ধনেই তরুণরা আজও সামনে এগিয়ে চলেছে, স্বাধীনতার মানে খুঁজছে এবং নিজেদের অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠা করছে।