Friday, September 19, 2025
Homeরাজনীতিইউনুসকে নেতৃত্ব দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা: ট্রাইব্যুনালে নাহিদ

ইউনুসকে নেতৃত্ব দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা: ট্রাইব্যুনালে নাহিদ

জানালেন জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক, একদিন আগে শেখ হাসিনার পতনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরলেন তিনি

জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার পতনের একদিন আগে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে নতুন সরকারের নেতৃত্ব দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ (আইসিটি-১) এ সাক্ষ্য দিতে গিয়ে তিনি এ তথ্য প্রকাশ করেন।

নাহিদ বলেন, “৩ আগস্ট আমরা এক দফা আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকারকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তাই আগেই বিকল্প নেতৃত্ব নিয়ে ভাবনা শুরু করি। জাতীয় সঙ্কটের সময়ে নেতৃত্ব দিতে পারবেন বলেই আমরা ড. ইউনুসকে প্রস্তাব দিই।”

তিনি আরও জানান, ৬ আগস্ট “ঢাকা মার্চ” কর্মসূচির ঘোষণা থাকলেও সরকার মোবাইল ও ইন্টারনেট বন্ধ করে আন্দোলন দমনের পরিকল্পনা নেয়। আন্দোলনকারীরা ঝুঁকি এড়াতে মার্চ এগিয়ে এনে ৫ আগস্টের দিকে নেন। ওই দিনই শেখ হাসিনার সরকার পতন ঘটে।

ট্রাইব্যুনালে নাহিদ ছিলেন মামলার ৪৭তম সাক্ষী। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে তিনি দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্য শেষ করেন। রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন তাঁকে জেরা করেন। শুনানি রবিবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।

সাক্ষ্যে নাহিদ আন্দোলনের সময়কার দমন-পীড়নের বর্ণনা দেন। তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে এবং হেলিকপ্টার থেকেও গুলি ছোড়ার নির্দেশ ছিল। আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত অস্ত্রধারী ব্যক্তিরাও হামলা চালায়।

নাহিদ শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে দায়ী করেন। তাঁর দাবি, আন্দোলনের সময় সহিংসতা ছিল পরিকল্পিত।

নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে নাহিদ বলেন, “ডিবি পুলিশ আমাকে অপহরণ করে হাতকড়া ও চোখ বেঁধে নির্যাতন করে। বারবার অচেতন হয়ে পড়ি। পরে আমাকে পুর্বাচলে ফেলে দেওয়া হয়। সেখান থেকে বাসায় ফিরে হাসপাতালে ভর্তি হই এবং সংবাদ সম্মেলন করে নির্যাতনের তথ্য প্রকাশ করি।”

তিনি আরও জানান, ডিএসএফআই (DGFI) অন্যান্য আন্দোলনকারীদেরও জোর করে আটক করে মন্ত্রীদের সঙ্গে বসতে বাধ্য করেছিল। সেই ছবি পরে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

মিডিয়ার ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা করেন নাহিদ। তাঁর ভাষায়, “অনেক গণমাধ্যম সরকারপন্থী অবস্থান নেয়, কিছু সাংবাদিক ফ্যাসিবাদকে সমর্থন করেন। এদেরও জবাবদিহি করতে হবে।”

প্রসঙ্গত, গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা ও আরও দুজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ গঠন করে ট্রাইব্যুনাল। মামলার এক আসামি, সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হিসেবে হাজির হন।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এর মধ্যে একটি গুমের অভিযোগ এবং আরেকটি ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ড সংশ্লিষ্ট।

RELATED NEWS

Latest News