জাতীয় সংস্কার ও ন্যায়বিচারের দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে একটি মহল কেবলমাত্র ক্ষমতায় থাকার লোভে পুরনো ব্যবস্থা ধরে রাখতে চাইছে বলে মন্তব্য করেছেন ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি)-এর আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
শনিবার সাতক্ষীরার শহীদ আসিফ চত্বরে আয়োজিত এক পথসভায় তিনি বলেন, “আমরা নতুন সংবিধান ও জাতীয় ঐক্যের সরকার চেয়েছি। কিন্তু একটি মহল তা প্রত্যাখ্যান করে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজদের রক্ষায় লিপ্ত।”
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “জনগণ যে আন্দোলনের মাধ্যমে এত প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে, সেই আন্দোলনের শক্তি এখনও মাঠে সক্রিয়। তারা ভাবছে, দুই-তিনটি সংসদীয় আসন দিয়ে বা ক্ষমতা ভাগাভাগির প্রলোভন দেখিয়ে আন্দোলন থামানো যাবে। কিন্তু যারা মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছে, তাদের কেউ কিনে নিতে পারবে না।”
তিনি জানান, “আমরা ৫ আগস্ট একটি জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা শুধু নির্বাচনের সময়সূচি নিয়েই কথা বলেছে, কোনো প্রকৃত সংস্কারের বিষয়ে সহযোগিতা করেনি।”
নাহিদ বলেন, “আমরা শত্রু তৈরি করতে চাই না, আমরা দেশ গড়তে চাই। সাতক্ষীরার মানুষ এখনও রেল, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। আমাদের জলবায়ু রক্ষা করতে হবে, সুন্দরবনকে বাঁচাতে হবে। জনগণের পাশে থাকুন, চাঁদাবাজদের ভয় পাবেন না।”
তিনি আরও বলেন, “যে ছাত্ররা ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে দিল্লি পাঠিয়েছে, তারা চাঁদাবাজদের ভয় পায় না। নতুন করে প্রস্তুত হোন, আমরা ন্যায়ের ভিত্তিতে বাংলাদেশ গড়ব।”
৩ আগস্ট ঢাকায় শহীদ মিনারে সমবেত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “সেখানে আমরা নতুন ঘোষণা দেব, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন করব।”
পথসভায় সভাপতিত্ব করেন সাতক্ষীরা জেলা এনসিপি সমন্বয়কারী কামরুজ্জামান বুলু। আরও বক্তব্য দেন দক্ষিণ অঞ্চলের প্রধান সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, উত্তর অঞ্চলের প্রধান সংগঠক সর্জিস আলম এবং যুগ্ম সংগঠক মেসবাহ কামাল।
পথসভা শুরুর আগে জুলাইয়ের গণআন্দোলনে নিহত ও আহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন নেতারা। পরে শহীদ আসিফ চত্বর থেকে একটি পথমিছিল বের হয়ে নিউ মার্কেট মোড়ে শেষ হয়। এরপর নিউ মার্কেট এলাকার আল-বারাকা হোটেলের দ্বিতীয় তলায় জেলা কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন নেতৃবৃন্দ।