ঢাকা, ২৬ মে, ২০২৫ (ডেপ্রবা) : বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ইউটিউবার হিসেবে পরিচিত জিমি ডোনাল্ডসন, যিনি ‘মিস্টার বিস্ট’ নামে খ্যাত, এখন বিশ্বের প্রথম ইউটিউব ভিত্তিক বিলিয়নিয়ার, যিনি ৩০ বছর পূর্ণ করার আগেই এই সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। দ্য ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদনে জানা গেছে, বর্তমানে তার নেট সম্পদ ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
২০১২ সালে নর্থ ক্যারোলাইনার নিজ বাসা থেকে গেমিং ও রিঅ্যাকশন ভিডিও বানিয়ে ইউটিউব যাত্রা শুরু করেছিলেন মিস্টার বিস্ট। শুরুর দিকের সংগ্রাম পেরিয়ে ২০১৭ সালে একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর তার জীবন বদলে যায়। ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি এক থেকে এক লাখ পর্যন্ত সংখ্যা গুনছেন টানা ৪৪ ঘণ্টা ধরে। ভিডিওটি বর্তমানে ৩১ মিলিয়ন ভিউ অতিক্রম করেছে।
সেই থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। কলেজ ছেড়ে ইউটিউবকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন তিনি। ২০২১ সালেই তার চ্যানেল ছিল সবচেয়ে দ্রুত সাবস্ক্রাইবার অর্জনকারী ইউটিউব চ্যানেল। ২০২৪ সালে মিস্টার বিস্ট চ্যানেল হয়ে ওঠে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সাবস্ক্রাইব করা ইউটিউব চ্যানেল। বর্তমানে তার সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ৩৯৭ মিলিয়ন ছাড়িয়েছে।
শুধু ইংরেজিতেই নয়, ১০টি ভিন্ন ভাষাতেও রয়েছে তার ইউটিউব চ্যানেল। ২০২৩ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিনের তালিকায় তিনি ছিলেন শীর্ষ কনটেন্ট নির্মাতা। ওই বছরেই তার আয় দাঁড়ায় ২২৩ মিলিয়ন ডলারে।
তবে কেবল ইউটিউবেই নয়, ব্যবসাতেও তার অবস্থান দৃঢ়। তার প্রতিষ্ঠিত চকলেট ব্র্যান্ড ‘Feastables’ এক বছরের মধ্যে আয় করে ১০ মিলিয়ন ডলার। এছাড়াও রয়েছে ডেলিভারি-ভিত্তিক ফাস্টফুড চেইন ‘MrBeast Burger’ এবং নতুন কনটেন্ট নির্মাতাদের সহায়তার জন্য ‘Creator Fund’।
ব্যক্তিগত লাভ নয়, মানবসেবাকেই নিজের জীবনদর্শন হিসেবে গ্রহণ করেছেন জিমি। কখনো ঘরহীনদের জন্য বাড়ি বানিয়ে দিয়েছেন, কখনো প্রতিবন্ধীদের চিকিৎসা করিয়েছেন, আবার কখনো দরিদ্র পরিবারকে গাড়ি উপহার দিয়েছেন। এসব কার্যক্রমকে কেন্দ্র করেই তৈরি ভিডিওগুলো তাকে এনে দিয়েছে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা।
২০১৯ সালে তিনি ঘোষণা দেন, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মানবতার সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করবেন এবং মৃত্যুর আগে তার অর্জিত সম্পদের প্রায় সবটুকুই দান করে যাবেন।
মিস্টার বিস্ট প্রমাণ করেছেন, সৃজনশীলতা, ধৈর্য এবং মানবিক মূল্যবোধ মিললে কনটেন্ট নির্মাণও হয়ে উঠতে পারে বৈশ্বিক পরিবর্তনের হাতিয়ার।