“সম্মানিত” শব্দের ব্যবহারে আপত্তি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার মতে, এই ধরনের উপাধি কর্তৃত্ববাদের বীজ বপন করে এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশে এটি অপ্রাসঙ্গিক।
মঙ্গলবার রাজধানীর বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে “সিভিল ডিসকোর্স ন্যাশনাল: ২০২৫” শীর্ষক বিতর্ক প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন তিনি। এই অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়েছিল বাংলাদেশ ডায়ালগ ও ঢাকা কলেজ ডিবেটিং সোসাইটির যৌথ উদ্যোগে।
ফখরুল বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বা স্পিকারকে ‘সম্মানিত’ বলা থেকে কি আমরা সরে আসতে পারি না? আমি মনে করি, এই শব্দটিতেই কর্তৃত্ববাদের শিকড় লুকিয়ে থাকে।”
তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রকৃত গণতন্ত্রের অনুশীলন খুব কম সময়ের জন্যই হয়েছে। “সম্ভবত পাকিস্তানি রাজনৈতিক ঐতিহ্যের প্রভাবেই আমরা সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ধারায় পূর্ণরূপে প্রবেশ করতে পারিনি।”
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, গণতন্ত্রের সৌন্দর্য হল মতপার্থক্য, বিতর্ক এবং ভিন্নমতকে স্বীকৃতি দেয়া। “আমি হয়তো আপনার মতের সঙ্গে একমত নই, কিন্তু আপনার মত প্রকাশের অধিকার রক্ষায় আমি জীবন দিতে রাজি।”
তিনি বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি উদার গণতন্ত্রে। আমরা বিশ্বাস করি যে আমার মত প্রকাশের স্বাধীনতা যেমন আছে, তেমনি আপনারও সেই স্বাধীনতা থাকা উচিত।”
তার বক্তব্যে দেশের তরুণ প্রজন্মের সক্রিয়তা নিয়ে আশাবাদ প্রকাশ করেন ফখরুল। অনেকেই হতাশা প্রকাশ করলেও তিনি মনে করেন, তরুণরাই এগিয়ে যাচ্ছে এবং তাদের হাত ধরেই পরিবর্তন সম্ভব।
“আমাদের তরুণরা আমাদের চেয়েও অনেক দূর এগিয়ে গেছে। আমি এখন আশাবাদী। অনেক কিছুই পরিবর্তন হবে। আমরা বাংলাদেশকে মাথা উঁচু করে দাঁড় করাবো,” বলেন তিনি।
এই অনুষ্ঠানে তরুণদের যুক্তি, মুক্তচিন্তা এবং গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিতার্কিক ও শিক্ষাবিদরা।
গণতন্ত্রের ভিত্তি মজবুত করতে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও উদার গণচর্চার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বিএনপি মহাসচিব।