বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শনিবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় সম্প্রতি পুরান ঢাকায় ব্যবসায়ীসহ একাধিক হত্যাকাণ্ড নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি এসব হত্যাকাণ্ডের দ্রুত তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে বিচার নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, এসব ঘটনা দ্রুত তদন্ত করুন এবং প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনুন। অন্যথায়, জনগণ সরকারকে দায়ী করবে এবং ক্ষমা করবে না।”
রাজধানীর এক হোটেলে ছাত্রদলের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সভায় শহীদ পরিবারদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই-আগস্ট মাসের গণআন্দোলনের এক বছরপূর্তি উপলক্ষে এ অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। এতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এ সময়ে এমন অস্থিরতা তৈরি করা জাতির জন্য বিপজ্জনক। যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না।”
তিনি বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রতি ধৈর্য ধারণ ও শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “কেউ যেন কোনো ধরনের ভুল কাজে না জড়ায়। বিএনপি কখনোই অন্যায়ের পক্ষে ছিল না, ভবিষ্যতেও থাকবে না।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হলে প্রথম ধাপ হচ্ছে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। এজন্য রাষ্ট্রের কাঠামো ও ব্যবস্থায় জরুরি সংস্কার প্রয়োজন।”
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং অপরাধের বৃদ্ধির জন্য তিনি অনির্বাচিত সরকারের দায়ী করে বলেন, “নির্বাচিত সরকার থাকলে তা আরও শক্তিশালী ও জবাবদিহিমূলক হতো।”
মির্জা ফখরুল ছাত্রদলকে আহ্বান জানান, তারা যেন একটি বই প্রকাশ করে যেখানে শহীদ সদস্যদের আত্মত্যাগের বিবরণ থাকবে। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শহীদদের যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হবে এবং তাদের পরিবারকে পাশে রাখা হবে।
তিনি আবারও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যেন জুলাই–আগস্টের আন্দোলনে নিহতদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও আহতদের পুনর্বাসন নিশ্চিত করা হয়।
বক্তব্যের একপর্যায়ে তিনি বলেন, “সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে তা সম্ভব।”