বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক পদত্যাগ করেছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্র জানায়, তিনি মঙ্গলবার ব্যক্তিগত কারণ উল্লেখ করে পদত্যাগপত্র জমা দেন।
গত বছরের ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে একের পর এক জনবল পরিবর্তনের ঘটনা ঘটছে। প্রথম ধাপে গভর্নর, দুই উপ-গভর্নর, বিএফআইইউ প্রধান এবং গভর্নরের নীতিনির্ধারক উপদেষ্টা—যারা সবাই চুক্তিভিত্তিক পদে ছিলেন—তাদের পদত্যাগ করতে বলা হয়েছিল। মেজবাউল হকের পদত্যাগ স্থায়ী কোনো কর্মকর্তার প্রথম সরে দাঁড়ানো।
মেজবাউল হক দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে দায়িত্ব পালন করেছেন। পেমেন্ট সিস্টেম, আইটি এবং অফসাইট তদারকি বিভাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব তার ওপর ছিল। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে তিনি নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হিসেবে নিয়োগ পান।
তার কার্যকালের মধ্যে নানা সময়ে অনিয়ম ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ওঠে। বিশেষ করে ২০১৬ সালের বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় তার নাম আলোচনায় আসে। অভিযোগ ছিল, তিনি বিদেশি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের আইটি কক্ষে প্রবেশের সুযোগ দিয়েছিলেন, যা তদন্তের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
এছাড়া তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সাথেও তার ঘনিষ্ঠতা ছিল বলে আলোচনায় উঠে আসে। তবে সরকার পতনের পর পরিস্থিতি পরিবর্তন হয় এবং তাকে ঢাকার প্রধান কার্যালয় থেকে রাজশাহীতে বদলি করা হয়।
ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করলেও এ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভেতরে নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই এটিকে পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতির ধারাবাহিকতা হিসেবে দেখছেন।