বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান হোসেন মনসুর আজ রোববার জানান, শিগগিরই পাঁচটি শারিয়াহ ভিত্তিক বেসরকারি ব্যাংকের একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শুরু হবে। তিনি আরও বলেন, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সরকার থেকে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
এর আগে, বাংলাদেশ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকিং সেক্টরের সংকট মোকাবিলায় একটি অনন্য উদ্যোগ নিয়েছে। ঋণ ডিফল্ট, প্রশাসনিক দুর্নীতি ও ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতার কারণে পাঁচটি শারিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংক একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই পাঁচটি ব্যাংক হলো: ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক এবং এক্সিম ব্যাংক। তাদের সম্পদ মূল্যায়ন ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এসব ব্যাংকের ডিফল্ট ঋণের হার ৪৮ শতাংশ থেকে ৯৬ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। একীভূতকরণের মাধ্যমে এই ব্যাংকগুলোকে সরকারের তত্ত্বাবধানে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
ড. মনসুর জানান, এই পাঁচ ব্যাংকের বাইরে অন্তত আরও ২০টি ব্যাংকের জন্য একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে, যার মধ্যে কিছু রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। তিনি এক বিশেষ বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের কথা উল্লেখ করেন, যার ৮২ শতাংশ শেয়ার বর্তমানে এস আলম গ্রুপের। শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে ব্যাংকের আর্থিক ঘাটতি পূরণ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বর্তমানে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ব্যাংক বন্ধ করার পরিকল্পনা নেই। বরং, দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সচল রাখতে সর্বোচ্চ সহায়তা দেওয়া হবে বলেও জানান গভর্নর।
আন্তর্জাতিক অডিট ফার্মের সম্পন্ন এস্যেট কোয়ালিটি রিভিউ রিপোর্ট অনুযায়ী, এই পাঁচ ব্যাংক মিলিয়ে ৭৭৯টি শাখা, ৬৯৮টি উপশাখা, ৫০০টি এজেন্ট আউটলেট এবং ১ হাজার এটিএম পরিচালনা করে। এ ব্যাংকগুলোতে মোট জমা টাকা ১ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা এবং ঋণের পরিমাণ ২ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা।
গুরুতর উদ্বেগের বিষয় হলো, এই ঋণের মধ্যে ১ লাখ ৪৭ হাজার কোটি টাকা বা ৭৭ শতাংশ ডিফল্ট। এ ঋণসংক্রান্ত ক্ষতিপূরণের ঘাটতি ৭৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংকট মোকাবিলায় দ্রুত কার্যক্রম গ্রহণে কাজ করে যাচ্ছে।