Monday, June 23, 2025
Homeজাতীয়পহেলা জানুয়ারিতে ‘গণ-জন্মদিন’ কেন, ব্যাখ্যা প্রধান উপদেষ্টার

পহেলা জানুয়ারিতে ‘গণ-জন্মদিন’ কেন, ব্যাখ্যা প্রধান উপদেষ্টার

ঢাকা, ২৭ মে, ২০২৫ (ডেপ্রবা) : বাংলাদেশে পহেলা জানুয়ারি জন্মতারিখধারী নাগরিকের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেশি, যা বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় ব্যতিক্রমী। এই ‘গণ-জন্মদিন’ বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, এটি শুধু একটি তারিখ নয়, বরং আমাদের প্রশাসনিক দুর্বলতা ও নাগরিক পরিচয় সংকটের প্রতিচ্ছবি।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশে এমন বহু মানুষ আছেন যারা তাদের প্রকৃত জন্মতারিখ জানেন না। অনেকে নিজের নামও জানেন না। তারা পরিচিত হন ‘অমুকের মেয়ে’, ‘অমুকের ছেলে’, বা ‘অমুকের মা’ হিসেবে। ব্যক্তিগত পরিচয়ের এই সংকট রাষ্ট্রীয় নথিপত্রে নানাবিধ জটিলতা সৃষ্টি করে।”

প্রধান উপদেষ্টা জানান, এনআইডি সিস্টেমে অন্তত ৫০ শতাংশ নাগরিকের জন্মতারিখ হিসেবে ১ জানুয়ারি উল্লেখ করা হয়েছে, যা বাস্তবসম্মত নয়। তিনি বলেন, “স্কুল-কলেজের শিক্ষক, বিশেষ করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকেরা প্রায়শই নিজ বিবেচনায় শিক্ষার্থীদের জন্মতারিখ নির্ধারণ করেন। ফলস্বরূপ অধিকাংশ শিক্ষার্থীর জন্মদিন হয়ে যায় পহেলা জানুয়ারি।”

এই সমস্যার সমাধানে হাসপাতালগুলোর ভূমিকা অপরিহার্য বলে মত দেন ইউনুস। তিনি বলেন, “প্রতিটি হাসপাতালে সন্তান জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই বাধ্যতামূলকভাবে জন্মনিবন্ধন, জন্মসনদ এবং এনআইডি তথ্য প্রস্তুত রাখতে হবে। যারা দায়িত্বে থাকবেন, তাদের স্পষ্ট নির্দেশনা দিতে হবে যে এটি তাদের কর্তব্য।”

আরও পড়ুন:

এনআইডি বা জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় বহু মানুষ ব্যাংকিং, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষাসহ নানা নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ইউনুস বলেন, “এমন অনেকে আছেন যারা ৬০ বছর বয়সে এসে বলেন, আমার তো জন্ম তারিখ নেই, কিছু একটা বসিয়ে দাও। এটা কোনো সুশাসনের চিত্র হতে পারে না।”

তিনি আরও বলেন, “এই বাস্তবতা পরিবর্তনে শুধু প্রযুক্তি নয়, দরকার সামাজিক ও প্রশাসনিক সচেতনতা। নাম, পরিচয় ও জন্মতারিখ নিশ্চিতকরণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যসেবা খাতের মধ্যে সমন্বয় থাকা জরুরি।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দীর্ঘদিনের গাফিলতির সমাধানে একটি শক্তিশালী ও বাধ্যতামূলক নীতিমালা প্রণয়ন ছাড়া বিকল্প নেই। নাগরিকদের সঠিক পরিচয় নিশ্চিতকরণই রাষ্ট্রের দায়িত্ব এবং তার ভিত্তিতে তৈরি হতে পারে একটি আধুনিক ও তথ্যভিত্তিক প্রশাসনিক কাঠামো।

RELATED NEWS

Latest News