Wednesday, July 23, 2025
Homeজাতীয়উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনায় ছাত্রদের বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ দিলেন শিক্ষিকা মাহেরিন

উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনায় ছাত্রদের বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ দিলেন শিক্ষিকা মাহেরিন

উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনায় উদ্ধারকাজ চালিয়ে নিজে নিহত হওয়া মাইলস্টোন কলেজের শিক্ষিকার দাফন সম্পন্ন হয়েছে নীলফামারীতে

উত্তরায় মাইলস্টোন কলেজে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় ছাত্রদের জীবন বাঁচাতে গিয়ে জীবন দিলেন বাংলার সাহসিনী শিক্ষিকা মাহেরিন চৌধুরী।

সোমবারের সেই বিভীষিকাময় দিনে, আগুন আর ধোঁয়ায় ভরা ভবনে একে একে শিক্ষার্থীদের বের করে আনেন মাহেরিন। কিন্তু শেষবার আর ফিরে আসেননি। মৃত্যুর আগ মুহূর্তেও দায়িত্বে অবিচল ছিলেন এই শিক্ষক।

মঙ্গলবার বিকেলে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বাগুলাগাড়ি গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। পাশে শায়িত হলেন মা-বাবার।

মাহেরিন ছিলেন মাইলস্টোন কলেজের সিনিয়র বাংলা শিক্ষক ও কো-অর্ডিনেটর। বাবা মাহিদুর রহমান চৌধুরী এবং মা চাঁদেদা চৌধুরীর কন্যা। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আত্মীয় হিসেবেও তিনি পরিচিত ছিলেন। স্বামী মনসুর হেলাল ও দুই সন্তান রেখে গেছেন তিনি।

সোমবার বিকেলে বিস্ফোরণের মুহূর্তে তিনি কলেজ ভবন থেকে শিক্ষার্থীদের বের করে আনছিলেন। শেষ ফোনকলটি ছিল স্বামীর সঙ্গে। সেখানে জানিয়েছিলেন, আরও ২০–২৫ জন শিক্ষার্থী ভেতরে আটকা পড়ে আছে। তারপরই আরেকবার ঢুকে যান আগুনের মধ্যে।

ভয়াবহ ধোঁয়া ও আগুনে তাঁর শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে যায়। রাতে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে মারা যান তিনি।

তাঁর গ্রামের মানুষরা জানিয়েছেন, মাহেরিন শুধু শিক্ষিকা ছিলেন না, ছিলেন একজন নিঃস্বার্থ সমাজকর্মী। ঈদে গ্রামে এলে দরিদ্রদের পাশে দাঁড়াতেন, স্কুলে অনুদান দিতেন, এমনকি কালভার্ট নির্মাণেও সাহায্য করেছেন। এ কারণেই স্থানীয়রা তাঁকে বাগুলাগাড়ি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অ্যাডহক কমিটির চেয়ারপারসনও নির্বাচিত করেন।

মাহেরিন চৌধুরীর আত্মত্যাগ দেশজুড়ে শ্রদ্ধা জাগিয়েছে। একজন শিক্ষিকা যিনি নিজের জীবন দিয়ে অন্যদের রক্ষা করেছেন, তাঁর এই আত্মদান ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবে।

  • বিষয়াদি সম্পর্কে আরও পড়ুন:
  • ঢাকা

RELATED NEWS

Latest News