Sunday, June 22, 2025
Homeজাতীয়উচ্চ আদালতের বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে রিট, আইনজীবীর আবেদন প্রক্রিয়া স্থগিতের দাবি

উচ্চ আদালতের বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে রিট, আইনজীবীর আবেদন প্রক্রিয়া স্থগিতের দাবি

ডেপ্রবা ডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী সম্প্রতি হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন দায়ের করেছেন, যেখানে তিনি নতুনভাবে চালু হওয়া বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার আবেদন জানিয়েছেন। আবেদনটি এমন সময়ে এসেছে, যখন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন প্রথমবারের মতো একটি সার্কুলারের মাধ্যমে অতিরিক্ত বিচারপতির জন্য জনসাধারণের কাছ থেকে আবেদন আহ্বান করেছে।

এই সার্কুলারটি ২৮ মে প্রকাশিত হয় এবং এটি সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি নিয়োগ অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর ধারা ৭(ক)-এর ভিত্তিতে জারি করা হয়। এই অধ্যাদেশটি জানুয়ারি ২১, ২০২৫ তারিখে আইন মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারি করা হয় এবং এটি আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিদের নিয়োগ প্রক্রিয়া নির্ধারণ করে।

আবেদনকারী অ্যাডভোকেট মো. আবু সাইয়েদ খান বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে এই রিট দাখিল করেন। তিনি দাবি করেছেন, এই অধ্যাদেশটি সংসদীয় আলোচনা ছাড়াই পাশ হয়েছে এবং এতে সাংবিধানিক ত্রুটি রয়েছে। তার মতে, এতে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে।

তবে বিষয়টি কেবল প্রক্রিয়াগত নয়। তার দাবি, এই অধ্যাদেশে আইনজীবীদের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বিশেষ করে, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতিকে বিচারপতি নিয়োগকারী পরিষদ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

এই পরিষদটির নাম সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল। অধ্যাদেশের ধারা ৩ অনুসারে, এটি গঠিত হয়েছে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে এবং বিচারপতি নিয়োগে সহায়তা করার জন্য। এই কাউন্সিল ধারা ৭ অনুযায়ী প্রার্থীদের তথ্য সংগ্রহ করতে পারে এবং প্রয়োজনে জনসাধারণের নিকট থেকে আবেদন আহ্বান করতে পারে।

২৮ মে-এর সার্কুলার ঠিক এই নিয়মেই জারি করা হয়েছে। তবুও, অনেক আইনজীবীর মত, এতে স্বচ্ছতা কমে গেছে।

ডেইলি স্টারকে দেওয়া এক বক্তব্যে আবু সাইয়েদ খান বলেন, “যখন শীর্ষ আইনজীবী প্রতিনিধিদের মতামত নেওয়া হয় না, তখন এটা কেমন করে গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ হতে পারে?”

তার আবেদনে তিনি হাইকোর্টকে অনুরোধ করেছেন, সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের কারণ দর্শাতে বলা হোক—এই অধ্যাদেশ কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের অধ্যাদেশে আইনজীবী প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্তি কেন বাধ্যতামূলক করা হবে না।

তিনি আরও অনুরোধ করেছেন, এই অধ্যাদেশের অধীনে সকল কার্যক্রম, প্রয়োগ ও কার্যকারিতা অবিলম্বে স্থগিত করা হোক।

এই অধ্যাদেশ জানুয়ারিতে জারি হলেও প্রথমবার বড় আকারে কার্যকর হয় ২৮ মে সার্কুলারের মাধ্যমে। এতে প্রার্থীরা এবং পেশাজীবী সমাজ কেউই খুব একটা প্রস্তুত ছিলেন না। অনেকেই বলছেন, বিষয়টি একটু হঠাৎ করেই সামনে এসেছে।

এই বিতর্ক শুধুই একটি আইনি ইস্যু নয়। এটি বিচার বিভাগের উপর মানুষের আস্থা, এবং এই আস্থা গঠনের প্রক্রিয়ায় কে কতটুকু অংশ নিতে পারছে, সেই প্রশ্নের সঙ্গে জড়িত।

এই রিটের শুনানি আগামী সপ্তাহে হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবেদনকারী।

আদালত এই আবেদনে কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা ভবিষ্যতের বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং স্বচ্ছতা নিয়ে আলোচনা গুলোকে অনেকটাই প্রভাবিত করতে পারে।

বিচারপতি নির্বাচনের দায়িত্ব ঠিক কার—এই প্রশ্নের উত্তর এখন বিচারব্যবস্থার ভবিষ্যত নির্ধারণ করতে পারে।

  • বিষয়াদি সম্পর্কে আরও পড়ুন:
  • আদালত

RELATED NEWS

Latest News