ডেইলি প্রতিদিনের বাণী রিপোর্ট
প্রকাশিত: ২৪ মে ২০২৫, ৬:২৫ পিএম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২০১৬ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে মার্কিন সেলিব্রিটি কিম কার্দাশিয়ানের হোটেল কক্ষে সংঘটিত ডাকাতি মামলায় শুক্রবার রায় ঘোষণা করেছে প্যারিসের একটি আদালত। মামলায় মূল পরিকল্পনাকারীসহ ৮ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হলেও, শারীরিক অসুস্থতা ও বয়সের কারণে কেউই নতুন করে কারাগারে যাচ্ছেন না।
৬০ ও ৭০ বছরের উর্ধ্বে থাকা অভিযুক্তদের প্রতি সহানুভূতির কথা উল্লেখ করে প্রধান বিচারক ডেভিড দে পাস বলেন, “এই সাজাগুলো খুব কঠোর নয়, কারণ আমরা তাঁদের স্বাস্থ্য ও বয়স বিবেচনা করেছি।”
মামলার মূল হোতা, ৬৯ বছর বয়সী আয়োমার আইত খেদাচে, ৮ বছরের সাজা পেলেও তার মধ্যে ৫ বছর স্থগিত। তিনজনকে ৭ বছর করে সাজা দেওয়া হয়, যার মধ্যে ৫ বছর স্থগিত। অন্য তিনজনের কারাদণ্ড ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে হলেও সেটিও আংশিক বা পুরোপুরি স্থগিত। আর একজন অস্ত্র বহনের অভিযোগে দণ্ডিত হয়ে জরিমানা দিয়েই ছাড়া পেয়েছেন।
রায় ঘোষণার সময় কিম কার্দাশিয়ান উপস্থিত ছিলেন না। তবে তাঁর আইনি দল এক বিবৃতিতে জানায়, “এই মামলা নিয়ে ফরাসি কর্তৃপক্ষের নিষ্ঠার জন্য কিম কৃতজ্ঞ। এটি তাঁর জীবনের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা ছিল।”
২০১৬ সালের ২ অক্টোবর, ফ্যাশন উইকের সময়, প্যারিসের হোটেল ডে পোরতালে কার্দাশিয়ানকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ৬ মিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের অলংকার লুট করা হয়। ডাকাতরা পুলিশ সেজে তাঁর রুমে ঢুকে তাঁকে বিছানায় ফেলে হাত ও পা বেঁধে মার্বেলের বাথরুমে আটকে রাখে।
কিম আদালতে বলেন, “আমি নিশ্চিত ছিলাম আমি মারা যাচ্ছি। আমি শুধু বলেছিলাম, আমার সন্তান আছে, আমাকে বাঁচতে হবে।”
এই ডাকাতির ঘটনাটি সেলিব্রিটিদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবিয়ে তোলে। কার্দাশিয়ান বলেন, এই ঘটনার পর তিনি আর কখনও তাৎক্ষণিকভাবে নিজের অবস্থান সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেননি।
ফরাসি গণমাধ্যমে অভিযুক্তদের “les papys braqueurs” বা “দাদু ডাকাত” নামে ডাকা হয়, যেহেতু বেশিরভাগেরই বয়স ৬০ বছরের বেশি।
মামলার সবচেয়ে আবেগঘন মুহূর্ত ছিল যখন খেদাচে ও কার্দাশিয়ান মুখোমুখি হন। খেদাচের পক্ষ থেকে পাঠানো একটি চিঠি পড়ে শোনানো হয়, যেখানে কিম তাঁকে ক্ষমা করে দেন।
তবে কিম বলেন, “আমি আপনাকে ক্ষমা করি, তবে এতে আমার অভিজ্ঞতা ও ক্ষত বদলায় না।”
এই ঘটনার পরপরই তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রদর্শন কমে যায় এবং অনেক সেলিব্রিটিও এই অভ্যাস অনুসরণ করেন।
ডায়মন্ড খচিত একটি ক্রস বাদে লুট হওয়া অন্য অলংকারগুলোর আর খোঁজ মেলেনি।
এই মামলা শেষ হওয়ায় কিম কার্দাশিয়ান বলেন, “আমি চাই এই অধ্যায় শেষ হয়ে যাক এবং সকলের জন্য নিরাময় আসুক।”