কেরালায় আবারও নিপাহ ভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ৫৭ বছর বয়সী এক ব্যক্তি ১২ জুলাই মালাপ্পুরামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান। মৃত্যুর পর তার শরীরে নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। ফলে রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ ওয়ার্ডভিত্তিক নজরদারি এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে কন্টাক্ট ট্রেসিং কার্যক্রম জোরদার করেছে।
এই নিয়ে চলতি বছরে কেরালায় নিপাহ সংক্রমণের সংখ্যা দাঁড়ালো চার। এর মধ্যে দু’জন মারা গেছেন, একজন সুস্থ হয়েছেন এবং অন্য একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। নতুন করে মারা যাওয়া ব্যক্তি কুমারামপুথুর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তার শরীরে ৬ জুলাই থেকে জ্বরসহ অন্যান্য উপসর্গ দেখা দেয় এবং তিনি কয়েকটি ক্লিনিক ও হাসপাতাল ঘুরে শেষ পর্যন্ত একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন।
কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ জানান, ইতোমধ্যে ৬০৯ জনের সংস্পর্শের ভিত্তিতে একটি রুট ম্যাপ তৈরি করা হয়েছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১১২ জন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। মৃতের বাড়ির এলাকা কনটেইনমেন্ট জোন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তি ৮, ৯ এবং ১০ জুলাই নিপাহ নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে ফোন পেলেও পরে আর যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি ৩০ জুন আগালি এলাকায় নিজস্ব বাগানে গিয়ে মাটিতে পড়ে থাকা একটি কাঁঠাল খেয়েছিলেন, যা বাদুড়ের কামড়ে সংক্রমিত হতে পারে। যদিও এখনো এ বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
মালাপ্পুরামের জেলা মেডিকেল অফিসার আর রেণুকা জানান, Acute Encephalitis Syndrome (AES) এবং Acute Respiratory Distress Syndrome (ARDS) স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে ভাইরাস শনাক্তে সহায়তা মিলছে। তিনি বলেন, এই সময় বাদুড়ের প্রজনন মৌসুম হওয়ায় ভাইরাসের ঝুঁকি বেড়েছে। তাই হাসপাতালে AES বা ARDS উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের ভাইরাল প্যানেল পরীক্ষার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, স্থানীয় হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগের রেজিস্টার এবং সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে যেসব ব্যক্তি ওই রোগীর সংস্পর্শে এসেছেন, তাদের শনাক্ত করে কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে জ্বরের লক্ষণ পর্যবেক্ষণের কাজ শুরু হয়েছে।
বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও স্বাস্থ্য বিভাগ আগাম সতর্কতা হিসেবে গোটা অঞ্চলে নজরদারি এবং সংক্রমণ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা অব্যাহত রেখেছে।