Tuesday, July 8, 2025
Homeআন্তর্জাতিককরাচিতে ভবন ধসে প্রাণ গেল ২৭ জনের, উদ্ধার অভিযান তিন দিন পর...

করাচিতে ভবন ধসে প্রাণ গেল ২৭ জনের, উদ্ধার অভিযান তিন দিন পর শেষ

সংকেত ছিল আগেই, অথচ উচ্ছেদের নোটিশ পৌঁছায়নি অনেক বাসিন্দার কাছে

পাকিস্তানের বন্দরনগরী করাচিতে ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে তিন দিনের উদ্ধার অভিযানের পর ২৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার স্থানীয় প্রশাসনের এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে করাচির লিয়ারী এলাকায় ছয়তলা একটি আবাসিক ভবন ধসে পড়ে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত বাসিন্দারা জানান, ধসের আগ মুহূর্তে তারা ভবন থেকে ফাটল ধরার শব্দ শুনতে পান।

জেলা প্রশাসনের প্রধান জাভেদ নবী খোসো সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, “ধ্বংসস্তূপের নিচে আর কোনো মরদেহ নেই নিশ্চিত হওয়ার পর অভিযান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মোট মৃতের সংখ্যা ২৭ জন।”

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহতদের মধ্যে ২০ জন হিন্দু ধর্মাবলম্বী। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি সন্দীপ মাহেশেওয়ারি বলেন, “অধিকাংশ পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র। তাই তারা বারবার উচ্ছেদের নোটিশ পেলেও ভবন ছাড়েননি।” তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই দাবি করেছেন, তারা কোনো উচ্ছেদের নোটিশ পাননি।

প্রশাসনের দাবি, ভবনটি ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে একাধিকবার ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছিল এবং বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

উল্লেখ্য, করাচির লিয়ারী এলাকা এক সময় গ্যাং সহিংসতার জন্য berucht ছিল। বর্তমানে কিছুটা স্থিতিশীল হলেও পুরনো অবকাঠামো এবং নিরাপত্তাহীন ভবনের কারণে এলাকাটি আবারো আলোচনায় এসেছে।

জেলা প্রশাসক খোসো জানান, লিয়ারী এলাকায় আরও ৫০টির বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে। শনিবার থেকে এখন পর্যন্ত ৫টি ভবন খালি করা হয়েছে। “এই অভিযান চলমান থাকবে যতদিন না সব ঝুঁকিপূর্ণ ভবন খালি করা যায়,” বলেন তিনি।

পাকিস্তানের মতো জনবহুল দেশে ভবন ও ছাদের ধস নতুন কিছু নয়। সস্তা মানের নির্মাণসামগ্রী, অনিয়ন্ত্রিত সম্প্রসারণ, দুর্বল অবকাঠামো এবং নির্মাণ নিয়মের প্রয়োগ না থাকায় এমন দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটে।

বিশেষ করে করাচির মতো ঘনবসতিপূর্ণ শহরে অনিয়ন্ত্রিত নগরায়ন এবং দুর্বল নীতিমালা বাস্তবায়নের কারণে ভবনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি দিন দিন বেড়েই চলেছে।

এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা আবারও মনে করিয়ে দিল, কীভাবে নগর ব্যবস্থাপনায় দায়িত্বহীনতা এবং দুর্বল প্রশাসনিক তৎপরতা প্রাণহানির জন্য দায়ী হতে পারে। এখন প্রশ্ন উঠছে, কতজনের মৃত্যু হলে ভবন নিরাপত্তা নিয়ে কর্তৃপক্ষ জবাবদিহি করবে?

RELATED NEWS

Latest News