জুলাই বিদ্রোহের এক বছর পার হলেও গুলিবিদ্ধ ভুক্তভোগীরা এখনো হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে কষ্টের সাথে দিন কাটাচ্ছেন। তাদের সুস্থ হওয়ার পথ দীর্ঘ ও অনিশ্চিত, প্রতিটি দিনই যন্ত্রণার সাথে আশা-নিরাশার লড়াই।
ঢাকার জাতীয় ট্রমাটোলজি ও অর্থোপেডিক পুনর্বাসন ইনস্টিটিউট (নিটার) পরিদর্শনে গিয়ে জানা যায়, এখনো ৯ জন গুলিবিদ্ধ রোগী সেখানে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসক ও ভুক্তভোগীরা জানান, দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা চললেও তাদের অনেকেরই পায়ে তীব্র ব্যথা রয়ে গেছে।
১৭ বছর বয়সী মো. সাব্বির শ্যামলীতে ৫ আগস্ট গুলিবিদ্ধ হন। তিনি বলেন, “আমার ডান পা থেকে প্রায় চার ইঞ্চি হাড় নেই। পা বেঁচে আছে, কিন্তু এখনো ছোট হয়ে গেছে। সরকার থেকে কোনো ভাতা পাই না, শুধু জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে ১ লাখ টাকা পেয়েছি। চিকিৎসা ও ওষুধ ফ্রি চলছে।”
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার ১৬ বছর বয়সী সাহিন আলম বলেন, “গুলিবিদ্ধ বাম পা নিয়ে এক বছর ধরে ভুগছি। পা এখনো দুই ইঞ্চি ছোট। পায়ে এখনো বাইরের ফিক্সেশন রিং লাগানো আছে। পরিবারকে বোঝা মনে হয়।”
আরেকজন রোগী, ২০ বছর বয়সী মনির খান জানান, “বাম পা চার ইঞ্চি ছোট হয়ে গেছে। এক বছর পরও হাসপাতালের শয্যায় থেকে সুস্থ হওয়ার জন্য লড়ছি।”
১৮ বছর বয়সী মো. হাসান বলেন, “ডান পা থেকে প্রায় ছয় ইঞ্চি হাড় নেই। দাঁড়ালেই এখনো রক্ত ঝরে। ডাক্তার বলেছেন বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানোর চেষ্টা চলছে। হাসপাতালের খাবার খুব খারাপ, তাই বাইরের খাবার আনতে হয়।”
নিটার-এ ভর্তি সব ভুক্তভোগীরই পায়ে গুলিবিদ্ধ ক্ষত রয়েছে। প্রত্যেকের পায়ে ফিক্সেশন রিং লাগানো হয়েছে যাতে হাড় ধীরে ধীরে জোড়া লাগে।
তারা দ্রুত উন্নত চিকিৎসা ও পরিবারের জন্য সরকারি সহায়তার দাবি জানিয়েছেন।