ঢাকায় ফেরত আসা প্রবাসীদের একটি দল রোববার রাজধানীতে বিক্ষোভ করেছেন। তাদের দাবি, সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) আটক থাকা বাংলাদেশি প্রবাসীদের দ্রুত মুক্তি দিতে হবে।
‘জুলাই ২০২৪ আন্দোলনের ভুক্তভোগী রেমিট্যান্স যোদ্ধা’ ব্যানারে বিক্ষোভকারীরা সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জামুনা রোডে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবনের দিকে মিছিল শুরু করেন।
তারা চার দফা দাবি উত্থাপন করেন। এর মধ্যে রয়েছে ইউএই-তে আটক থাকা প্রবাসীদের মুক্তি, ভুক্তভোগীদের “জুলাই প্রবাসী যোদ্ধা” হিসেবে স্বীকৃতি, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন, এবং সকল ফেরত প্রবাসীর নাম জাতীয় ডেটাবেইসে অন্তর্ভুক্ত করা।
বিক্ষোভকারীরা জানান, যদি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে কেউ তাদের সঙ্গে দেখা না করেন, তবে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
তবে মিছিলটি ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে পৌঁছালে পুলিশ তাদের থামিয়ে দেয়। এতে আশপাশের এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে সাকুরা ক্রসিং থেকে মিন্টু রোড পর্যন্ত যান চলাচল বিঘ্নিত হয়।
হবিগঞ্জ থেকে ফিরেছেন এমন এক কর্মী আহমেদ হোসেন বলেন, “আমরা জুলাই আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেছিলাম। সেই কারণে আমাদের জেলে যেতে হয়েছে। কেউ এখনও বন্দি, কেউ দেশে ফেরত এসেছে। আমরা ন্যায্য বিচার ও মুক্তি চাই। তা না হলে আমরা রাজপথ ছাড়ব না।”
ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার বাসিন্দা নুরুন্নাহার বলেন, “আমার স্বামী ২০২৪ সালের ২৯ অক্টোবর থেকে দুবাইয়ে বন্দি। আমার ভাইও একইভাবে জেল খাটছে। আমরা শুধু তাদের মুক্তি চাই, অন্য কিছু না।”
২০২৪ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশে সরকারি চাকরির কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলনের সময় ইউএই-তে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা সেখানেও বিক্ষোভে অংশ নেন।
২০ জুলাই রাতে দুবাই, শারজাহ ও আজমানে বিক্ষোভকারীদের ওপর অভিযানে ইউএই পুলিশ ৫৭ জন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করে। পরে স্থানীয় আদালত তিনজনকে যাবজ্জীবন, একজনকে ১১ বছর এবং বাকিদের ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেয়।
ঘটনার পর ইউএই বাংলাদেশিদের জন্য নতুন ভিসা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে।
বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্ব নেওয়ার পর ইউএই সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেন। এর ফলস্বরূপ ১৩২ জন বাংলাদেশিকে ক্ষমা করে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।