আগামী মাস থেকেই জুলাই মাসে সংঘটিত ছাত্র-জনতার গণবিদ্রোহে অংশ নেওয়া আহত ও শহীদদের পরিবারের জন্য মাসিক ভাতা প্রদান শুরু হচ্ছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম।
তিনি বলেন, “শুধু মাসিক ভাতা নয়, আহত জুলাই বিদ্রোহীরা আজীবন সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবেন। তাদের জন্য প্রশিক্ষণ, চাকরি এবং পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
সরকারের অস্থায়ী মন্ত্রিসভার অধীনে মাত্র সাত থেকে আট মাসে শহীদ ও আহতদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে, যা ১৯৭১ সালের মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকার তুলনায় অনেক দ্রুত সম্পন্ন হয়েছে বলে উল্লেখ করেন উপদেষ্টা।
মন্ত্রিপরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আহত বিদ্রোহীদের তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে।
‘এ’ ক্যাটাগরিতে যারা চিরতরে চলাফেরার সক্ষমতা হারিয়েছেন, তাদেরকে প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা এবং এককালীন ৫ লাখ টাকা দেওয়া হবে।
‘বি’ ক্যাটাগরির যাদের আংশিক অক্ষমতা রয়েছে, তারা প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা এবং এককালীন ৩ লাখ টাকা পাবেন।
‘সি’ ক্যাটাগরির যারা চিকিৎসার পর বর্তমানে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছেন, তারা প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা এবং এককালীন ১ লাখ টাকা পাবেন।
এছাড়াও শহীদ পরিবারগুলোকে ৩০ লাখ টাকা এককালীন সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে তাদের মধ্যে ১০ লাখ টাকা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জাতীয় সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। বাকি ২০ লাখ টাকা ২০২৫-২৬ অর্থবছরে দেওয়া হবে।
ফারুক-ই-আজম জানান, এখন পর্যন্ত ৮৩৪ জন শহীদের তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের পরিবার প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা ভাতা পাবে এবং যোগ্য সদস্যদের সরকারি বা আধা-সরকারি চাকরিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
আহতদের পুনর্বাসনের জন্য মন্ত্রণালয়ের ১০ তলায় একটি পৃথক বিভাগ গঠিত হয়েছে, যেখানে ২০ জন কর্মকর্তা দিনরাত কাজ করছেন।
তিনি বলেন, “এটি কেবল অর্থনৈতিক সহায়তা নয়, বরং তাদের ত্যাগের সম্মান প্রতিষ্ঠা এবং ইতিহাসের প্রতি জাতির দায়িত্ব পালনের প্রতীক।”
তিনি আরও জানান, আগস্টের ৫ তারিখকে ‘জুলাই গণবিদ্রোহ দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই দিনটি জাতীয় দিবস হিসেবে গুরুত্বসহকারে পালন করা হবে।
উপদেষ্টা জানান, শহীদদের ৮৩৪ পরিবারের মধ্যে ১৩৪টি পরিবার উত্তরাধিকারজনিত কারণে এখনো পুরো সহায়তা পায়নি। তবে এই জটিলতা দ্রুত সমাধান করা হবে।
আহতদের তালিকায় যেসব ত্রুটি পাওয়া গেছে, সেগুলো তদন্ত করে সংশোধন করা হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।