জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) শিক্ষক ও ছাত্রদের ওপর হামলার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার রাতে প্রশাসনিক ভবনের গেটে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেছে তারা। অভিযোগ উঠেছে, ছাত্রদলের কর্মীরা ব্যবস্থাপনা বিভাগের দুই শিক্ষক ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের তিন নেতাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে।
রাত প্রায় ৯টার দিকে শিক্ষার্থীরা একটি মিছিল নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হয়। এরপর ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে তারা প্রতিবাদ সমাবেশ শুরু করে।
প্রতিবাদকারীদের দাবি, এই হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি মূল দোষীদের আড়াল করছে এবং গুটিকয়েককে দায়ী করে বিচারের নাটক করছে। জবি’র এক শিক্ষার্থী ফেরদৌস শেখ বলেন, “আমাদের শিক্ষক ও সহপাঠীদের দিনে-দুপুরে মারধর করা হয়েছে। অথচ প্রশাসন চুপিচুপি ব্যবস্থা নিচ্ছে, হামলাকারীদের নাম প্রকাশ করছে না। এটা যেমন অদ্ভুত, তেমনি সন্দেহজনক।”
হামলার ঘটনার সূত্রপাত হয় গত বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের নিচে ব্যবস্থাপনা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র রফিক বিন সাদেক রেশাদকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মারধর করে বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ অনুযায়ী, রেশাদকে ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার সন্দেহে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়।
ঘটনার সময় শিক্ষক ও ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা ড. কাম রিফাত হাসান এবং সহকারী প্রক্টর শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলে তারাও ছাত্রদলের হামলার শিকার হন। তাদের ওপর শারীরিক ও মৌখিকভাবে আক্রমণ চালানো হয় বলে অভিযোগ করেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
একই সময়ে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের জবি শাখার সভাপতি মো. ফয়সাল মুরাদ, প্রধান সংগঠক ফেরদৌস হাসান এবং যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুককেও মারধর করা হয়। হামলাকারীরা তাদের ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে সন্দেহ করেছিল।
এই ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা দ্রুত বিচার এবং দোষীদের নাম প্রকাশের দাবি জানিয়ে একাধিক কর্মসূচি পালন করছে। তারা বলছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকা ভবিষ্যতে আরো সহিংসতার জন্ম দিতে পারে।
এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি পাওয়া যায়নি। তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা তাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।