প্রশান্ত মহাসাগরের আকাশসীমায় চীনা যুদ্ধবিমানের বিপজ্জনক কর্মকাণ্ড নিয়ে জাপান সরকার চীনের প্রতি কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে। গত সপ্তাহান্তে এই অঞ্চলে চীনের দুইটি কার্যকরী বিমানবাহী রণতরী প্রথমবারের মতো একযোগে মোতায়েনের পরপরই এই ঘটনা ঘটে।
জাপানের কিওডো সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, শানডং বিমানবাহী রণতরী থেকে ছেড়ে আসা একটি চীনা জে-১৫ যুদ্ধবিমান জাপানের পি-৩সি সামুদ্রিক নজরদারি বিমানের মাত্র ৪৫ মিটার দূরত্ব দিয়ে বিপজ্জনকভাবে উড়ে যায়। শনিবার ও রবিবার দুদিন ধরেই এমন ঘনিষ্ঠ উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
জাপানের প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি জানান, ‘‘আমরা চীনা পক্ষের কাছে বিষয়টি নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ জানিয়েছি এবং অনুরূপ ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধের দাবি করেছি।’’
জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ওকিনাওয়া দ্বীপ থেকে পরিচালিত পি-৩সি বিমানগুলো আন্তর্জাতিক জলসীমার ওপরে নজরদারি চালানোর সময় এই ঘটনাগুলো ঘটে।
শনিবার শানডং থেকে উড়ে আসা একটি জে-১৫ প্রায় ৪০ মিনিট ধরে জাপানি প্যাট্রল বিমানের পিছু নেয়। পরদিন রবিবার আরেকটি জে-১৫ প্রায় ৮০ মিনিট ধরে একটি পি-৩সি বিমানের সামনে মাত্র ৯০০ মিটার দূরত্বে অতিক্রম করে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ ধরনের অস্বাভাবিক ঘনিষ্ঠ উপস্থিতি অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘর্ষের আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে।
এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘‘চীনা সামরিক বিমানগুলোর এমন আচরণ দুর্ঘটনাজনিত সংঘর্ষের সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে।’’ এ সংক্রান্ত ছবিও প্রকাশ করেছে মন্ত্রণালয়। যদিও এই ঘটনায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা বিমানের ক্রুর কোনো ক্ষতি হয়নি বলে জানানো হয়েছে।
জাপানের প্রধান সরকারী মুখপাত্র হায়াশি আরও জানান, টোকিও বেইজিংয়ের সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ চালিয়ে যাবে এবং জাপানের আকাশসীমার পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।
এর আগে ২০১৪ সালের মে ও জুন মাসে এমন একটি ঘটনা সামনে এসেছিল, যেখানে চীনা এসইউ-২৭ যুদ্ধবিমান জাপানি সামরিক বিমানের মাত্র ৩০ মিটার দূরত্ব দিয়ে উড়ে গিয়েছিল।
কিওডো সংবাদ সংস্থা আরও জানায়, সোমবার শানডং রণতরী জাপানের দক্ষিণাঞ্চলের ওকিনোটোরি দ্বীপের উত্তরে জাপানের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের (ইইজেড) ভেতর টেকঅফ ও ল্যান্ডিং মহড়া চালায়। একই সময় লিয়াওনিং রণতরীকেও ইইজেড এলাকায় দেখা যায়। রোববার সেটিও ইইজেডের বাইরে গিয়ে মহড়া চালায়।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরনের সামরিক উপস্থিতি আঞ্চলিক উত্তেজনা আরও বাড়াতে পারে। একই সঙ্গে এমন অস্বাভাবিক মুভ আকাশপথে নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে বলে উদ্বেগ জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মহল।
