নতুন সুপারম্যান ছবিকে ঘিরে আলোচনার ঝড় বইছে বিশ্বব্যাপী। পরিচালনায় রয়েছেন ‘গার্ডিয়ানস অব দ্য গ্যালাক্সি’ খ্যাত জেমস গান, যিনি এবার শুধু সুপারহিরো নয়, তার মাধ্যমে মানবিকতা, নৈতিকতা ও অভিবাসন নিয়ে একটি গভীর বার্তা দিতে চাচ্ছেন।
দ্য সানডে টাইমস-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেমস গান বলেন, “সুপারম্যান মানেই আসলে আমেরিকার গল্প। একজন অভিবাসীর গল্প, যে ভিনদেশ থেকে এসে এই দেশকে গড়েছে। তবে আমার কাছে এটা মূলত একটি গল্প, যা বলে— মানুষের সাধারণ দয়া একটি মূল্যবোধ এবং সেটিই আমরা হারিয়ে ফেলেছি।”
বর্তমান যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, বিশেষ করে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতির প্রেক্ষিতে এই মন্তব্যের তাৎপর্য অনস্বীকার্য। গান জানান, ছবিটি বিভিন্ন রাজনৈতিক দর্শন অনুযায়ী বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা হতে পারে, তবে কারও ‘অফেন্ড’ হওয়া নিয়ে তার চিন্তা নেই।
“হ্যাঁ, এটি ভিন্নভাবে বাজবে বিভিন্ন মহলে,” বলেন গান। “কিন্তু ছবিটি মানবিকতা নিয়ে এবং দুনিয়ায় সবসময় কিছু লোক থাকবে যারা অমানবিক। তারা এটাকে আক্রমণাত্মক ভাবতেই পারে। তবে তাদের নিয়ে ভাবার কিছু নেই।”
ডেভিড করেনসওয়েট ও র্যাচেল ব্রোসনাহান অভিনীত এই সুপারম্যান ছবিটি এক তরুণ ক্লার্ক কেন্টের জীবন ঘিরে। একদিকে তার ক্রিপ্টোনিয়ান পরিচয়, অন্যদিকে মানুষের মাঝে বড় হয়ে ওঠা এবং মেট্রোপলিস শহরের একজন সাংবাদিক হিসেবে তার দ্বন্দ্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা।
গান বলেন, “এই সুপারম্যান এমন এক সময়ে আসছে, যখন মানুষ অন্যের ভালবাসা বা দয়ায় আস্থা হারিয়ে ফেলছে। আমি এমন একজন চরিত্রের গল্প বলছি, যিনি অনন্যভাবে ভাল এবং এটা এখন খুব দরকার। কারণ সমাজে অনেক বেশি নিষ্ঠুরতা জন্ম নিচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমি দুনিয়া বদলাতে সিনেমা বানাই না, তবে কেউ যদি এই ছবি দেখে একটু হলেও সহানুভূতিশীল হয়, তবেই আমি খুশি হব।”
ছবিটি শুধু রাজনীতি নয়, বরং নৈতিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে। গান বলেন, “সুপারম্যান বিশ্বাস করে, কোনো অবস্থাতেই হত্যা করা যায় না। লুইস লেন আবার মনে করেন, কিছু ভারসাম্য থাকা দরকার। এই মতবিরোধই মূলত তাদের সম্পর্কের টানাপড়েন সৃষ্টি করে। নৈতিক দর্শনের ভিন্নতা কীভাবে মানুষকে আলাদা করে দিতে পারে, সেটাই আমরা দেখাতে চেয়েছি।”
নতুন সুপারম্যান ছবিটি ১১ জুলাই প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে যাচ্ছে।