তিহার জেলে বন্দি থাকা সত্ত্বেও দিল্লির আলোচিত গ্যাংস্টার আমিত ওরফে ‘দবাং’ শুক্রবার পাঁচ ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেন। ঘটনাটি ঘটে উত্তর দিল্লির নরেলা অঞ্চলের তাজপুর গ্রামে, যেটি গ্যাংটির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আমিত বর্তমানে নিহত গ্যাংনেতা টিল্লু তাজপুরিয়ার ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে গ্যাংটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। টিল্লু ২০২৩ সালের মে মাসে তিহার জেলে প্রতিদ্বন্দ্বী গোগি গ্যাংয়ের হাতে নিহত হন। সেই ঘটনার পর থেকেই আমিত গ্যাংয়ের সক্রিয় কার্যক্রম পরিচালনা করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিয়ের অনুষ্ঠান ঘিরে দিল্লি ও হরিয়ানার অন্যান্য সংঘবদ্ধ অপরাধচক্রগুলোর নজর ছিল, এমনটিই জানিয়েছে বার্তা সংস্থা পিটিআই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য ও বিশেষ বাহিনীর ইউনিট মোতায়েন করা হয়।
দিল্লি পুলিশ জানায়, “আমিতকে সরাসরি বিয়ের স্থানে আনা হয়। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ একাধিক দল নিয়োজিত ছিল।”
আমিতের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলার অভিযোগ। তার বিরুদ্ধে মহারাষ্ট্র সংঘবদ্ধ অপরাধ নিয়ন্ত্রণ আইন (MCOCA) ধারায় মামলাও রয়েছে। দিল্লি পুলিশ একসময় তার তথ্যদাতার জন্য দুই লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করেছিল।
তাছাড়া, ২০২৩ সালের গ্রীষ্মে আলিপুর এলাকায় টিল্লুর মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে সংগঠিত এক খুনের ঘটনায়ও আমিতকে সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ২০১৮ সালে গোগির ঘনিষ্ঠ সহযোগী মনু নেপালির মৃত্যু নিয়েও এই গ্যাং দ্বন্দ্ব ব্যাপক আকার ধারণ করে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। ২০২৪ সালের মার্চ মাসে আরেক গ্যাংস্টার কালা জাঠেদি আদালতের অনুমতিক্রমে ছয় ঘণ্টার প্যারোলে বেরিয়ে ‘লেডি ডন’ খ্যাত অনুরাধা চৌধুরীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ওই সময় নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল এসডব্লিউএটি কমান্ডো, স্পেশাল সেল ও ক্রাইম ব্রাঞ্চের টিম।
এছাড়া, ২০২৪ সালের জুন মাসে কালা জাঠেদিকে আইভিএফ চিকিৎসার প্রয়োজনে কারা প্যারোল দেওয়া হয়।
চলতি সপ্তাহেই আরেক কুখ্যাত অপরাধী নীরজ বাওয়ানা একদিনের জন্য প্যারোলে বেরিয়ে তার অসুস্থ স্ত্রীকে হাসপাতালে দেখতে যান।
এই ধারাবাহিকতায় বন্দি গ্যাংস্টারদের প্যারোলে বেরিয়ে ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়ার প্রবণতা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নাগরিক মহলে।