আজ ৩ নভেম্বর, জেলহত্যা দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় মুক্তিযুদ্ধের চার শীর্ষ নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এএইচএম কামারুজ্জামানকে।
স্বাধীনতার পর দেশের প্রথম সরকার গঠনে এবং মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় এই চার নেতার অবদান ছিল অনন্য। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর, তারই দলের আরেক নেতা খন্দকার মোশতাক আহমদের শাসনামলে সংঘটিত হয় এই হত্যাকাণ্ড—যা বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ রাজনৈতিক ঘটনা হিসেবে বিবেচিত।
তৎকালীন সরকারে সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছিলেন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি, তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রী, এম মনসুর আলী অর্থমন্ত্রী এবং এএইচএম কামারুজ্জামান স্বরাষ্ট্র, ত্রাণ ও পুনর্বাসনমন্ত্রী।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ’ বাতিল করে জেলহত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু করে।
দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত ২০ আসামির মধ্যে ১৫ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দেন। তাদের মধ্যে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—সার্জেন্ট মুসলেম উদ্দিন, সেন্ট্রি মরফত আলী শাহ ও সেন্ট্রি মোহাম্মদ আবুল হাশেম মৃধা।
২০০৮ সালের ২৮ আগস্ট হাইকোর্ট ছয়জনকে খালাস দিয়ে মরফত আলী শাহ ও আবুল হাশেম মৃধার মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে। তবে ২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় খারিজ করে ২০০৪ সালের রায় বহাল রাখে।
আজকের দিনটি প্রতি বছর আওয়ামী লীগ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন করলেও চলতি বছর দলটি কোনো আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি নেয়নি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগ প্রকাশ্য রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে বিরত রয়েছে।
সরকারচ্যুতির পর শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেছেন এবং সেখানেই নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
