কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামকে সমকামিতাসহ একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অফিস আদেশে বলা হয়, বিভাগটির একাধিক শিক্ষার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬৬তম সিন্ডিকেট সভায় হাফিজুল ইসলামের বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট বাতিল এবং এক বছরের বাধ্যতামূলক ছুটির সিদ্ধান্ত হয়।
পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে আরও বিস্তৃত তদন্ত চালানো হয়। সেই অনুসন্ধানেও শিক্ষার্থীদের অভিযোগের যথার্থতা উঠে আসে। ফলে ৩১ মে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬৮তম সাধারণ সিন্ডিকেট সভার ৭ নম্বর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধিমালার ৪(১)(এফ) ধারা অনুযায়ী, হাফিজুল ইসলামকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়।
এর আগে, ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর, সমকামিতাসহ নানা অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। শিক্ষার্থীদের জমা দেয়া ২৭টির বেশি লিখিত অভিযোগ ও মৌখিক বর্ণনার ভিত্তিতে তদন্ত চলে। অভিযোগের মধ্যে জোরপূর্বক সমকামী আচরণ, নিপীড়ন ও যৌন হয়রানির অভিযোগ অন্যতম।
তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ২৩ অক্টোবর তাকে বিভাগীয় কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়।
২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর শিক্ষার্থীরা শিক্ষক বরখাস্তের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের কাছে লিখিতভাবে এবং সরাসরি অভিযোগ জানিয়ে হাফিজুল ইসলামের অপসারণ দাবি করেন।
ছাত্রদের ধারাবাহিক আন্দোলন এবং তদন্তের সুপারিশের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নেয় বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শিক্ষকতার মতো দায়িত্বশীল পেশায় থেকে এমন আচরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ও সুনামের পরিপন্থী। ভবিষ্যতে শিক্ষার্থী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।