ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় একদিনেই প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৯৩ জন ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ২৬০ জন। বৃহস্পতিবার আল জাজিরা ও বার্তাসংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
চিকিৎসা সূত্রের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, বুধবার ভোর থেকে গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে বিপুলসংখ্যক মানুষ হতাহত হন।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩ হাজার ৬৫০ জনে। একই সময়ে আহত হয়েছেন ১ লাখ ২১ হাজার ৯৫০ জনেরও বেশি মানুষ। বহু হতাহত এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন। উদ্ধারকারীরা অনেক এলাকায় পৌঁছাতে পারছেন না, ফলে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এছাড়া পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবিরে বিদেশি কূটনীতিকদের পরিদর্শনের সময় ইসরায়েলি বাহিনী গুলি ছুড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইসরায়েল গাজায় স্থল অভিযান ও বোমা হামলার মাত্রা বাড়িয়েছে। যদিও গত জানুয়ারিতে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছিল, তবে মার্চে ইসরায়েল সেই চুক্তি ভঙ্গ করে আবারও পূর্ণমাত্রায় হামলা শুরু করে।
এর আগে ২০২৩ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
এছাড়া গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) মামলা চলছে। বিভিন্ন দেশ ও মানবাধিকার সংস্থা এই যুদ্ধকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
গাজার চলমান সংকটকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে না পারায় জনজীবন হয়ে উঠেছে আরও দুর্বিষহ। পরিস্থিতি নিরসনে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ববাসী।