গাজায় চলমান যুদ্ধ এবং শিশুদের ওপর সহিংসতার ঘটনায় ইসরায়েল দ্বিতীয়বারের মতো জাতিসংঘের কালো তালিকায় স্থান পেয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে সশস্ত্র সংঘর্ষে শিশুদের ওপর সহিংসতার মাত্রা বিশ্বব্যাপী নজিরবিহীন পর্যায়ে পৌঁছেছে।
জাতিসংঘের শিশু ও সশস্ত্র সংঘর্ষ সম্পর্কিত বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে বিশ্বজুড়ে ৪১ হাজার ৩৭০টি গুরুতর শিশু অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নিশ্চিত করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটেছে গাজা উপত্যকা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে, যেগুলো ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২ হাজার ৯৫৯ শিশুর বিরুদ্ধে ৮ হাজার ৫৫৪টি লঙ্ঘন হয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৯৪৪ জন ফিলিস্তিনি এবং ১৫ জন ইসরায়েলি শিশু রয়েছে। শুধু গাজাতেই নিহত হয়েছে ১ হাজার ২৫৯ শিশু এবং আহত হয়েছে আরও ৯৪১ জন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, ২০২৪ সালে আরও ৪ হাজার ৪৭০ শিশুর মৃত্যুর বিষয়টি যাচাই করা হচ্ছে।
অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ৩ হাজার ৬৮৮টি লঙ্ঘনের মধ্যে ৯৭ জন ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হওয়ার ঘটনাও প্রতিবেদনটিতে উঠে এসেছে। লেবাননেও ইসরায়েলি অভিযানে পাঁচ শতাধিক শিশু নিহত বা আহত হয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, “অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চল ও ইসরায়েলে শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার মাত্রা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। জনবসতিপূর্ণ এলাকায় বিস্ফোরক অস্ত্র ব্যবহারের ঘটনায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।”
তিনি ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ করার আহ্বান জানান, বিশেষ করে শিশুদের নিরাপত্তা, স্কুল ও হাসপাতাল সুরক্ষা এবং বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষয়ক্ষতি এড়িয়ে চলার ব্যাপারে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসেম ব্রিগেড এবং ইসলামিক জিহাদের আল-কুদস ব্রিগেডকেও দ্বিতীয়বারের মতো এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ফিলিস্তিন ছাড়াও ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, সোমালিয়া, নাইজেরিয়া ও হাইতিতে উল্লেখযোগ্য হারে শিশুদের ওপর সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধির হার দেখা গেছে লেবাননে (৫৪৫ শতাংশ), এরপর মোজাম্বিক, হাইতি, ইথিওপিয়া এবং ইউক্রেনে।
এখনও পর্যন্ত ইসরায়েলের জাতিসংঘ মিশনের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।