Tuesday, September 9, 2025
Homeআন্তর্জাতিকফিলিস্তিনি বন্দিদের খাদ্য সংকটে ব্যর্থ ইসরায়েল, সর্বোচ্চ আদালতের রায়

ফিলিস্তিনি বন্দিদের খাদ্য সংকটে ব্যর্থ ইসরায়েল, সর্বোচ্চ আদালতের রায়

গাজা যুদ্ধ, যুদ্ধবিরতি আলোচনায় অনিশ্চয়তা ও হামাসকে যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কবার্তা

ইসরায়েলের সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছে, দেশটির কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দিদের পর্যাপ্ত খাবার সরবরাহে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। রোববার দেওয়া রায়ে আদালত জানায়, বন্দিদের ন্যূনতম পুষ্টি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের আইনি বাধ্যবাধকতা।

আদালতের তিন সদস্যের বেঞ্চ বলেছে, বন্দিদের “মৌলিক জীবনধারার” জন্য পর্যাপ্ত খাবার সরবরাহ করতে হবে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে যে, কারাগারে নীতিমালার পরিবর্তনের কারণে অনেক বন্দি অপুষ্টি ও অনাহারে ভুগছে।

গত বছর ইসরায়েলের সিভিল রাইটস অ্যাসোসিয়েশনসহ কয়েকটি সংগঠন এ বিষয়ে আদালতে পিটিশন দায়ের করেছিল। রায়ের পর সংগঠনটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি জানিয়েছে।

গাজা যুদ্ধ ও হামাসকে সতর্কবার্তা

অক্টোবর ২০২৩ সালে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে হাজারো ফিলিস্তিনি আটক রয়েছেন। এর মধ্যে অনেককে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়।

অন্যদিকে, গাজায় যুদ্ধবিরতি আলোচনায় নতুন করে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রোববার হামাসকে চূড়ান্ত সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে সমঝোতা এখনই করতে হবে। তিনি জানান, ইসরায়েল প্রস্তাব মেনে নিয়েছে, এখন হামাসের সম্মতি দেওয়ার সময়।

ট্রাম্প বলেন, “এটি আমার শেষ সতর্কবার্তা, এর পরে আর কোনো সুযোগ থাকবে না।” জবাবে হামাস এক বিবৃতিতে জানায়, তারা অবিলম্বে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।

বর্তমানে গাজায় এখনো ৪৮ জন ইসরায়েলি জিম্মি রয়েছেন, এর মধ্যে প্রায় ২০ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইসরায়েল বারবার সব জিম্মিকে ফেরত আনার শর্তেই সমঝোতায় রাজি হওয়ার কথা জানিয়ে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসের ওপর পূর্ণ বিজয়ই জিম্মিদের মুক্ত করবে।

যুদ্ধ পরিস্থিতি

গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি অভিযানে কমপক্ষে ৮৭ জন নিহত হয়েছেন। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৪ হাজারের বেশি। জাতিসংঘ এ সংখ্যা নির্ভরযোগ্য বলে জানালেও ইসরায়েল তা অস্বীকার করেছে।

সপ্তাহান্তে ইসরায়েলি বাহিনী গাজা সিটিতে তিনটি বহুতল ভবন ধ্বংস করেছে। রোববার আল-রোয়া ভবন লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়। এর আগে শুক্রবার মুশতাহা টাওয়ার এবং শনিবার সুশি টাওয়ার ধ্বংস করা হয়।

ইসরায়েলি সেনারা দাবি করেছে, এসব ভবনে হামাসের গোয়েন্দা সরঞ্জাম ও বিস্ফোরক রাখা ছিল। তবে ফিলিস্তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, সাধারণ মানুষকে টার্গেট করার জন্য মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে।

বন্দিদের পরিস্থিতি

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, ইসরায়েল ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে বন্দিদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটিকে সাক্ষাতের অনুমতি দেয়নি। ওই হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়।

ফিলিস্তিনি বন্দিদের অভিযোগ, কারাগারে তাদেরকে নির্যাতন ও অমানবিক আচরণের শিকার হতে হয়। এ বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায়কে অনেকেই ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।

অন্যদিকে ইসরায়েলের নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গেভির বলেছেন, তিনি কেবল আইনে নির্ধারিত ন্যূনতম শর্তই বন্দিদের জন্য কার্যকর করবেন। তার দাবি, গাজায় আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের জন্য কোনো সর্বোচ্চ আদালত নেই।

RELATED NEWS

Latest News