গাজা শহরে ইসরায়েলি সেনাদের অভিযান জোরদার হওয়ায় ইসরায়েলে যুদ্ধবিরতির দাবিতে বিক্ষোভ বেড়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় তেলআবিব ও জেরুজালেমে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। তারা সরকারের কাছে যুদ্ধ বন্ধ করে বন্দিদের মুক্তির দাবিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানান।
শনিবার ইসরায়েলি সেনারা গাজায় দুটি বহুতল ভবনে বিমান হামলা চালায়। এতে বন্দিদের জীবন নিয়ে পরিবারগুলোর উদ্বেগ আরও বাড়ে। হামলার পরই দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। জেরুজালেমে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বাসভবনের সামনে চলমান আন্দোলন আরও তীব্র হয়।
বন্দি নিমরোদ কোহেনের মা ভিকি কোহেন বিক্ষোভে বলেন, “এখনই হয়তো আমার ছেলের ভাগ্য নির্ধারণ হচ্ছে। সময় অত্যন্ত সংকটাপন্ন।”
শুক্রবার গাজা যুদ্ধের ৭০০তম দিনে হামাস নতুন প্রচারণামূলক ভিডিও প্রকাশ করে, যেখানে দুই বন্দিকে দেখা যায়। একই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, গাজায় জীবিত বলে ধারণা করা ২০ বন্দির মধ্যে কেউ কেউ সম্প্রতি মারা যেতে পারে। তার মন্তব্যে বন্দি পরিবারগুলোর উদ্বেগ আরও বেড়ে যায়।
ইসরায়েলের সরকারি হিসাব অনুযায়ী গাজায় এখনও ৪৮ জন বন্দি রয়েছেন, যাদের মধ্যে ২০ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেনা কর্মকর্তারা পরিবারগুলোকে জানিয়েছেন, চলমান অভিযানে বন্দিদের জীবনের ঝুঁকি রয়েছে।
বন্দি পরিবারগুলোর অভিযোগ, ইসরায়েলি সেনাদের তৎপরতায় তাদের প্রিয়জনদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এর আগে রাফাহতে সেনাদের অভিযানের সময় ছয়জন বন্দিকে হত্যা করে হামাস।
অভিযান জোরদারের পর থেকে ইসরায়েলে প্রতিবাদ কর্মসূচি আরও বিস্তৃত হয়েছে। আয়োজকরা জানান, সাপ্তাহিক বিক্ষোভে লাখো মানুষ অংশ নিচ্ছেন।
হামাস গত মাসে কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নেয়। এতে জীবিত ১০ এবং মৃত ১৮ বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তবে ইসরায়েল প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করে। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু কেবল পূর্ণাঙ্গ চুক্তি চান, যাতে সব বন্দি মুক্তি ও হামাসের নিরস্ত্রীকরণ অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
শনিবার হামাস আবারও যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে। এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে আলোচনা চালাচ্ছে এবং বন্দি পরিবারগুলো আশা করছে এতে সমঝোতার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।
তেলআবিবে বন্দি পরিবারের স্কয়ারে একটি বড় ব্যানারে লেখা ছিল, “ট্রাম্প – এখনই বন্দিদের বাঁচান।”