Tuesday, November 18, 2025
Homeআন্তর্জাতিকগাজা যুদ্ধের অবসান চুক্তির পথে, হামাস বন্দি বিনিময়ে রাজি: আশাবাদী নেতানিয়াহু

গাজা যুদ্ধের অবসান চুক্তির পথে, হামাস বন্দি বিনিময়ে রাজি: আশাবাদী নেতানিয়াহু

গাজা উপত্যকায় সংঘাতের অবসানে মিসরে আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও হামাসের প্রতিনিধি

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু শনিবার বলেছেন, হামাসের হাতে আটক বন্দিদের কয়েক দিনের মধ্যেই দেশে ফেরানোর আশা করছেন তিনি। প্রায় দুই বছর ধরে চলমান গাজা যুদ্ধের অবসানে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় নতুন আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সতর্ক করেছেন, হামাস যদি বিলম্ব করে, তবে তিনি “সহ্য করবেন না”। এর আগে ট্রাম্প গাজার যুদ্ধ-পরবর্তী প্রশাসন ও বন্দি বিনিময় নিয়ে একটি রোডম্যাপ প্রস্তাব করেন, যা হামাস ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে।

শনিবার সকালে গাজার বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৫৭ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে হামাসের নিয়ন্ত্রিত সিভিল ডিফেন্স সংস্থা। ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির আহ্বানের পরও ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে।

নেতানিয়াহু এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, “সামরিক ও কূটনৈতিক চাপে হামাসকে বন্দি মুক্তির বিষয়ে রাজি করানো সম্ভব হয়েছে। আশা করি সুক্কট উৎসবের মধ্যেই আমরা সবাইকে ফিরিয়ে আনতে পারব।”

তিনি জানান, মিসরে আলোচনায় অংশ নিতে ইসরায়েলি প্রতিনিধিদল পাঠানো হয়েছে। কায়রোও নিশ্চিত করেছে যে হামাসের প্রতিনিধিরা সেখানে অংশ নেবেন, বন্দি বিনিময় ও যুদ্ধবিরতির বিস্তারিত চূড়ান্ত করতে।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর জামাতা জারেড কুশনার ও প্রধান মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফকে আলোচনায় অংশ নিতে মিসরে পাঠিয়েছেন।

শুক্রবার রাতে হামাস জানায়, “ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী সব বন্দি—জীবিত ও মৃতদের—বিনিময়ে মুক্তি দিতে রাজি।” এর পরপরই ট্রাম্প একে “স্থায়ী শান্তির প্রস্তুতি” বলে উল্লেখ করেন এবং ইসরায়েলকে বোমাবর্ষণ বন্ধের আহ্বান জানান।

শনিবার তিনি হামাসকে সতর্ক করে বলেন, “চুক্তি দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে, নইলে সব কিছু ব্যর্থ হবে।”

নেতানিয়াহু বলেন, “হামাসকে নিরস্ত্র করা হবে—ট্রাম্পের পরিকল্পনার মাধ্যমে কূটনৈতিকভাবে, না হলে সামরিকভাবে।”

এদিকে তেল আবিবে হাজারো মানুষ জড়ো হয়ে ট্রাম্পের পরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে।

গাজা সিটির বাসিন্দা মাহমুদ আল-গাজি বলেন, “ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছিলেন, কিন্তু হামলা আরও বেড়েছে। আলোচনাগুলো দ্রুত এগোতে হবে, না হলে এই হত্যাযজ্ঞ থামবে না।”

আরো পড়ুন | গাজা থেকে ‘প্রাথমিক প্রত্যাহার রেখা’তে ইসরায়েলের সম্মতি জানিয়েছে ট্রাম্প

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গাজা সিটিতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং বাসিন্দাদের সেখানে না ফেরার আহ্বান জানানো হয়েছে।

হামাসের এক কর্মকর্তা জানান, যুদ্ধোত্তর গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে বিভিন্ন ফিলিস্তিনি দলের অংশগ্রহণে কায়রোতে একটি সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে।

ট্রাম্পের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, হামাস বা অন্য কোনো গোষ্ঠী গাজার প্রশাসনে ভূমিকা রাখবে না। বরং যুদ্ধবিরতির ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বন্দি বিনিময়, ধাপে ধাপে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার ও হামাসের নিরস্ত্রীকরণের ব্যবস্থা থাকবে। যুদ্ধ-পরবর্তী প্রশাসন পরিচালনা করবে একটি প্রযুক্তিগত পরিষদ, যার তত্ত্বাবধানে থাকবেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজে।

হামাসের অক্টোবর ৭, ২০২৩ সালের হামলায় ইসরায়েলে ১,২১৯ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক। ইসরায়েলের পাল্টা অভিযানে গাজায় অন্তত ৬৭,০৭৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘ। নিহতদের অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু।

RELATED NEWS

Latest News