ইসরায়েলের এক জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গাজায় আসন্ন অভিযানের ফলে এক মিলিয়ন ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হতে পারেন। এজন্য নতুন একটি মানবিক এলাকা ঘোষণার পরিকল্পনা করছে কর্তৃপক্ষ।
প্রায় দুই বছরের যুদ্ধের মধ্যে গাজার দুই মিলিয়নেরও বেশি মানুষের অধিকাংশই অন্তত একবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এবার ইসরায়েলি সেনারা গাজা সিটি দখলের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের সবচেয়ে বড় নগর কেন্দ্র। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, শহরটি এবং এর আশপাশে প্রায় এক মিলিয়ন মানুষ বসবাস করে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বেসামরিক বিষয় তদারককারী সংস্থা কগাটের এক কর্মকর্তা জানান, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে উত্তরের অনেক বাসিন্দা দক্ষিণে চলে যাচ্ছেন। তার ভাষায়, “এ পর্যন্ত প্রায় ৭০ হাজার মানুষ উত্তর থেকে দক্ষিণে গেছেন।” তিনি আরও বলেন, কর্তৃপক্ষ আশা করছে প্রায় এক মিলিয়ন মানুষ দক্ষিণমুখী হবেন।
গত আগস্টে ইসরায়েলের এক সামরিক মুখপাত্র বলেছিলেন, গাজা সিটি খালি করানো “অবশ্যম্ভাবী”। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক রেডক্রস সতর্ক করেছে, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণভাবে এত মানুষকে সরিয়ে নেওয়া অসম্ভব হবে।
নতুন মানবিক এলাকা ঘোষণার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এ এলাকা মধ্য গাজার শরণার্থী শিবিরগুলো থেকে শুরু করে দক্ষিণের আল-মাওয়াসি পর্যন্ত এবং পূর্বদিকে বিস্তৃত হবে। যদিও যুদ্ধের শুরুর দিকে আল-মাওয়াসিকে মানবিক এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, পরে ইসরায়েল সেখানে বারবার হামলা চালিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, আল-মাওয়াসিতে মানুষের খাদ্য, পানি, বিদ্যুৎ ও আশ্রয়ের মতো মৌলিক চাহিদা পূরণের সুযোগ প্রায় নেই বললেই চলে।
কগাটের সাম্প্রতিক এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জনগণকে দক্ষিণে স্থানান্তরে সহায়তার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আছে মিশর থেকে আল-মাওয়াসি পর্যন্ত নতুন পানির লাইন স্থাপন, ইসরায়েলের ক্ষতিগ্রস্ত পানির লাইন মেরামত, দক্ষিণাঞ্চলের একটি লবণাক্ত পানি বিশুদ্ধকরণ প্লান্টে বিদ্যুৎ সংযোগ এবং খান ইউনিসে ইউরোপীয় হাসপাতাল পুনরায় চালুর কাজ।
হাসপাতালটি কয়েক সপ্তাহ ধরে বন্ধ ছিল, যেখানে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে হামাস নেতা মোহাম্মদ সিনওয়ার নিহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়।