Thursday, August 7, 2025
Homeআন্তর্জাতিকগাজা পরিস্থিতি নিয়ে ইসরায়েলের ভেতরে বিভক্তি, পূর্ণ দখল নিয়ে মতবিরোধ

গাজা পরিস্থিতি নিয়ে ইসরায়েলের ভেতরে বিভক্তি, পূর্ণ দখল নিয়ে মতবিরোধ

গাজা দখলের পরিকল্পনা নিয়ে সেনাবাহিনী প্রধান ও নেতানিয়াহুর মধ্যে মতানৈক্য, আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ

গাজা দখলের পরিকল্পনাকে ঘিরে ইসরায়েলের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বের মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও গভীর হয়েছে। যুদ্ধ ২৩তম মাসে পা রাখতেই প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু নতুন একটি পরিকল্পনা ঘোষণা করতে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে, যার আওতায় গাজার পূর্ণ সামরিক দখল নিয়ে আলোচনা চলছে।

সরকারি সূত্রের বরাতে ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হতে পারে। কিন্তু এতে আপত্তি তুলেছেন সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির। তিনি এক বৈঠকে স্পষ্টভাবে জানান, গাজা দখলের পদক্ষেপ হবে “একটি ফাঁদে পা দেওয়া।” তিনি বিকল্প হিসেবে হামাসের ঘাঁটি গুলো ঘিরে ফেলার প্রস্তাব দেন।

বুধবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এক্স-এ দেয়া বার্তায় বলেন, “সেনাপ্রধানের মত প্রকাশের অধিকার রয়েছে, তবে সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে, তা বাস্তবায়ন করবে আইডিএফ।”

এদিকে গাজা সিটির উত্তরে এবং দক্ষিণের খান ইউনিস এলাকায় নতুন করে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছে সেনাবাহিনী। সেনা মুখপাত্র জানিয়েছেন, “মাঠপর্যায়ে যুদ্ধ কার্যক্রম সম্প্রসারণের প্রস্তুতি চলছে।”

ইসরায়েলের নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা আহ্বান করেছেন পূর্ণ দখল সংক্রান্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে।

বিরোধী দলীয় নেতা ইয়াইর লাপিদ বলেন, “গাজা দখল একটি মারাত্মক ভুল হবে। কৌশলগত, নৈতিক ও আর্থিক দিক থেকে এটি বিপর্যয়কর সিদ্ধান্ত।”

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ বিষয়ে বলেন, গাজা দখলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া ইসরায়েলের বিষয়।

এদিকে, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ মঙ্গলবার ইসরায়েলি জিম্মিদের পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষ অধিবেশন করেছে। এখনো গাজায় ৪৯ জন জিম্মি অবস্থায় রয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৭ জনকে মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বেড়েই চলেছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজায় দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়েছে।

বুধবার গাজার কেন্দ্রীয় অঞ্চলে খাদ্য সহায়তার অপেক্ষায় থাকা মানুষের ওপর একটি ট্রাক উল্টে পড়লে অন্তত ২২ জন নিহত হয়। গাজার সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর জোরে ট্রাকটিকে বোমাবর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত বিপজ্জনক রাস্তায় চলাচলে বাধ্য করা হয়েছিল।

গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত সরকার দাবি করেছে, “ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে মানবিক সহায়তা পৌঁছানো ব্যাহত করছে।” যদিও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এই ঘটনার সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছে।

২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১,২১৯ জন নিহত হয়। পাল্টা অভিযানে ইসরায়েলের বোমাবর্ষণে গাজায় এখন পর্যন্ত ৬১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক।

RELATED NEWS

Latest News