গাজার খাদ্য সহায়তা কেন্দ্রে খাদ্য সংগ্রহ করতে আসা মানুষের ওপর গুলি চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে অন্তত ৫৭ জন নিহত ও ৩৬৩ জনের বেশি আহত হয়েছেন। গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সির বরাত দিয়ে ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপি এ তথ্য জানিয়েছে।
সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, বুধবার গাজার একটি মার্কিন সহায়তাপ্রাপ্ত খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রের সামনে জড়ো হওয়া হাজার হাজার মানুষের ওপর ইসরায়েলি ট্যাংক ও ড্রোন থেকে গুলি চালানো হয়। তিনি বলেন, “আমরা অন্তত ৫৭ জন শহীদ ও ৩৬৩ জনের বেশি আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে গেছি।”
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মে মাসের শেষ দিক থেকে এ পর্যন্ত খাদ্য সহায়তা নিতে আসা ২২৪ জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। আহত হয়েছে আরও এক হাজার ৮৫৮ জন।
খাদ্য সহায়তা পেতে স্থানীয় সময় রাত ২টা থেকেই ওই কেন্দ্রের সামনে জড়ো হতে শুরু করেছিলেন সাধারণ মানুষ। ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে গুলির মাত্রা আরও বাড়ানো হয় বলে জানান বাসাল।
গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ আবু সালিমা জানান, তাদের হাসপাতালে ২৪ জনের মৃতদেহ আনা হয়েছে এবং আহত অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে ৯৬ জনকে।
আরও পড়ুন: গাজায় যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের, আপাতত ইরানে হামলার পরিকল্পনা স্থগিত
কেন্দ্রীয় গাজার নুসেইরাত ক্যাম্পের আল-আওদা হাসপাতাল জানিয়েছে, তারা সাতজন নিহত ও ১১২ জন আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসা দিচ্ছে।
গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) ২৭ মে থেকে গাজায় খাদ্য বিতরণ কার্যক্রম শুরু করে। তবে তখন থেকেই সহায়তা নিতে আসা মানুষের ওপর একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটছে। আন্তর্জাতিক মহলের চাপ সত্ত্বেও ইসরায়েলি বাহিনী এ ধরনের হামলা বন্ধ করেনি।
বুধবার গাজার সরকার পরিচালিত মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে গাজায় অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে। একদিকে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করছে, অন্যদিকে খাদ্য সংগ্রহ করতে আসা ক্ষুধার্ত মানুষদের লক্ষ্য করে গুলি চালাচ্ছে।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ১০০ দিন আগে গাজায় সামান্য সংখ্যক সহায়তা ট্রাক ঢুকতে দেওয়া শুরু হলেও সেগুলোও হামলা কিংবা সশস্ত্র গ্যাংয়ের লুটপাটের শিকার হচ্ছে। এই গ্যাংগুলো ইসরায়েলি বাহিনীর মদদপুষ্ট বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দিন দিন মানবিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো নিরবচ্ছিন্ন ও নিরাপদভাবে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়ে আসছে।
