ঢাকা, ৩০ মে, ২০২৫ (ডেপ্রবা) : অধিকৃত পশ্চিম তীর অঞ্চলে ২২টি নতুন অবৈধ ইহুদি বসতি নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েল সরকার। এই সিদ্ধান্তে আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। মানবাধিকার সংস্থা ও একাধিক পশ্চিমা দেশ একে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করেছে।
ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, এই পরিকল্পনার আওতায় পূর্বে অবৈধভাবে স্থাপিত বসতিগুলোকেও বৈধতা দেওয়া হবে এবং নতুন ইহুদি সম্প্রদায় স্থাপন করা হবে পশ্চিম তীরের উত্তরে ফিলিস্তিনি জমিতে।
বর্তমানে আনুমানিক ৭ লাখ ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে বসবাস করছে, যেখানে বসবাস করে প্রায় ২৭ লাখ ফিলিস্তিনি। এই বসতিগুলো আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ হিসেবে গণ্য হলেও ইসরায়েল তাদের বৈধতা দেওয়ার চেষ্টায় অনড়।
এই অনুমোদনের ঘোষণার মাত্র কয়েকদিন আগেই আটটি পশ্চিমা দেশ—যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, স্পেন ও নিউজিল্যান্ড—পশ্চিম তীর অঞ্চলে সহিংসতার জন্য দায়ী ইসরায়েলি ব্যক্তিদের ওপর যৌথ নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এসব নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রয়েছে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও সম্পদ জব্দ, যার লক্ষ্য হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা এবং সম্পত্তি ধ্বংসের সঙ্গে জড়িতদের।
বিশ্লেষকদের মতে, নতুন এই বসতিগুলো শুধু রাজনৈতিকভাবে উত্তেজনা বাড়াবে না, বরং ভবিষ্যতে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের সম্ভাবনাকেও আরও দুর্বল করে তুলবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বারবার সতর্ক করে বলেছে, পশ্চিম তীরে বসতি নির্মাণ সরাসরি জেনেভা কনভেনশনের লঙ্ঘন।
ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্তে ফিলিস্তিনি নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং বলেন, এটি ফিলিস্তিনি জনগণের স্বপ্ন ও অধিকারের সরাসরি অবমূল্যায়ন। একইসাথে তারা জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কার্যকর হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন।
বিশ্বজুড়ে কূটনৈতিক আলোচনায় এই ইস্যুটি নতুন করে গুরুত্ব পেতে পারে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। তবে ইসরায়েল সরকার এখনো নিজেদের অবস্থানে অনড় রয়েছে। আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার মুখেও বসতি নির্মাণের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অগ্রসর হচ্ছে তারা।