গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি জানায়, বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৪৪ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৫ জন গাজা শহরে মারা গেছেন। শহরটি ইসরায়েলের পরিকল্পিত সামরিক অভিযানের আগে তীব্র বোমাবর্ষণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।
প্রায় দুই বছর ধরে চলা ধ্বংসাত্মক সংঘাতের মধ্যে ইসরায়েল সাম্প্রতিক দিনে গাজা শহরের প্রান্তে সৈন্য মোতায়েন করেছে। গাজা শহর হলো ফিলিস্তিনের সবচেয়ে বড় শহুরে কেন্দ্র। জাতিসংঘের অনুমান অনুযায়ী শহর ও এর আশপাশে প্রায় এক মিলিয়ন মানুষ বসবাস করছে, যেখানে জাতিসংঘ খরা ঘোষণা করেছে।
একজন সিনিয়র ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, গাজা শহর দখলের নতুন অভিযানের ফলে ব্যাপক মানুষ দক্ষিণের দিকে স্থানান্তরিত হবে। প্রায় এক মিলিয়ন ফিলিস্তিনি মানুষ স্থানান্তরের মুখে পড়তে পারেন।
সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানিয়েছেন, গাজা শহরের একটি তাঁবু লক্ষ্য করে বিমান হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে তিন শিশু।
গাজা শহরের ওয়েস্টে তেল আল-হাওয়া এলাকার ছবি দেখাচ্ছে, মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত তাঁবু থেকে ছড়ানো জিনিসপত্র সরাচ্ছেন। ধ্বংসপ্রাপ্ত মাটির মধ্যে রক্তমাখা গোলাপি চটি পড়ে রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ইসরা আল-বাসুস জানিয়েছেন, তাঁর পাশের তাঁবু আগুনে ঘেরা হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘‘আমার শিশুরা এবং আমি তাঁবুতে ঘুমাচ্ছিলাম, তখন বোমার শব্দ শুনলাম। শ্যাপ্রেল আমাদের ওপর পড়লো, আমার চার সন্তান চিৎকার শুরু করল।’’
গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালে মৃত ও আহতদের রাখা হয়েছে। মৃতদেহগুলো সাদা কফনে মোড়া রয়েছে। এক মহিলা মৃত ছেলের মাথায় হাত বুলাচ্ছেন এবং কান্না করছেন।
দক্ষিণে নুসিরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় সাতজন নিহত হয়েছেন, তিন শিশু। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ইউসেফ সুলেমান তাঁর নাতনীর সঙ্গে ধ্বংসপ্রাপ্ত তাঁবুর মধ্য দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। তিনি জানান, প্রি-ডন হ্যামল হামলায় তাঁর ভাইপো, ভাইপোর স্ত্রী ও দুই সন্তান নিহত হয়েছেন। ‘‘পুরো তাঁবু ধ্বংস হয়েছে, সবাই সহ,’’ তিনি বললেন।
গাজায় মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ এবং প্রবেশাধিকার সীমিত হওয়ায় স্বাধীনভাবে নিহত ও ক্ষয়ক্ষতির তথ্য যাচাই করা কঠিন।
এই যুদ্ধ ২০২৩ সালের অক্টোবর হামাসের ইসরায়েলি আক্রমণের পর শুরু হয়। সেই হামলায় ১,২১৯ জন নিহত হয়, অধিকাংশই বেসামরিক। পাল্টা ইসরায়েলি অভিযানে গাজায় অন্তত ৬৪,২৩১ জন নিহত হয়েছেন, অধিকাংশই বেসামরিক।