Sunday, June 29, 2025
Homeআন্তর্জাতিকতরুণদের সমাজ বদলের ডাক দিলেন ড. ইসমাইল সেরাগেলদিন, ইউনূসকে জানালেন আস্থা

তরুণদের সমাজ বদলের ডাক দিলেন ড. ইসমাইল সেরাগেলদিন, ইউনূসকে জানালেন আস্থা

সোশ্যাল বিজনেস ডে-তে প্রফেসর ইউনূসকে সমর্থন জানিয়ে বললেন, “এই রূপান্তরের উপযুক্ত নেতা তিনি”

বিশ্বব্যাংকের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং নিজামী গঞ্জাভি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারের সহসভাপতি ড. ইসমাইল সেরাগেলদিন বাংলাদেশি তরুণদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে আসার, স্বপ্ন দেখার এবং সামাজিক উদ্যোক্তা হয়ে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার।

ঢাকায় অনুষ্ঠিত ১৫তম ‘সোশ্যাল বিজনেস ডে’ উপলক্ষে ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “তোমার স্বপ্নকে বিশ্বাস করো, তাকে অনুসরণ করো এবং এগিয়ে চলো।”

উন্নয়ন, বিজ্ঞান ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী বিশেষ অবদান রাখা এই চিন্তাবিদ বলেন, প্রকৃত উন্নয়ন আসে নিচু স্তর থেকে, যেখানে সম্মান, সংহতি ও সামাজিক ব্যবসার চেতনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

নোবেলজয়ী ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের দীর্ঘদিনের বন্ধু সেরাগেলদিন বলেন, “তিনি প্রমাণ করেছেন, দরিদ্রতম মানুষরাও নিজেদের জীবন উন্নয়ন করতে পারে।”

তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “তোমরা ডিজিটাল যুগে বেড়ে উঠেছো। প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে সমাজকে বদলে দেওয়া সম্ভব, কিন্তু সেটা যেন কেবল করপোরেট লাভের জন্য না হয়ে সমাজের সবার অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করে হয়।”

তিনি আরও বলেন, “যেসব কিছু অসম্ভব মনে হয়, অনেক সময় তা সম্ভব হয়ে যায়। তরুণদের স্বপ্ন দেখতে দিতে হবে।”

প্রফেসর ইউনূসের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্বের শুরু ১৯৮০-এর দশকে, মাইক্রোক্রেডিট নিয়ে যৌথ উদ্যোগের সময়। তিনি বলেন, “এটি কেবল ঋণের বিষয় নয়, এটি মানুষের সম্মান ও মর্যাদার বিষয়।”

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বিস্তারিত জানেন না বলেও স্বীকার করেন, তবে ইউনূসের সততা ও নৈতিকতা নিয়ে তাঁর আস্থা অটুট। তিনি বলেন, “এই রূপান্তরকালীন সময়ে যদি কারও ওপর ভরসা করা যায়, তবে তা প্রফেসর ইউনূস।”

তিনি আশা প্রকাশ করেন, “তিনি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দিকে দেশের যাত্রা নিশ্চিত করবেন। আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের মানুষ সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।”

বাংলাদেশের জনগণের পরিশ্রম, অগ্রগতি ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “যদিও অনেক অর্জন হয়েছে, তবে আরও অনেক কিছু করতে হবে। এই দেশ ঘনবসতিপূর্ণ এবং এর ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি সম্পর্কেও সতর্ক করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির প্রভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। তবে আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ এখন তার পরবর্তী রূপান্তরের জন্য প্রস্তুত।”

সোশ্যাল বিজনেস ডে উপলক্ষে প্রফেসর ইউনূসকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, “তাঁর আত্মবিশ্বাস ও হাসিমুখ এখনও অব্যাহত আছে, এটা সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক।”

উল্লেখ্য, দারিদ্র্য বিমোচন, টেকসই উন্নয়ন ও জ্ঞান শেয়ারিংয়ে অসামান্য অবদানের জন্য ড. ইসমাইল সেরাগেলদিন আন্তর্জাতিকভাবে বহু সম্মাননা পেয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে গ্রামীণ ফাউন্ডেশনের ‘লাইফটাইম কমিটমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ (১৯৯৯), জাপানের ‘অর্ডার অব দ্য রাইজিং সান’ (২০০৮) এবং ইউএস ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস-এর ‘পাবলিক ওয়েলফেয়ার মেডেল’ (২০১১)।

RELATED NEWS

Latest News