সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শনিবার এক মহাসমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ১৬ দফা দাবি তুলে ধরেছে। দলের আমির সৈয়দ রেজাউল করিম এই মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। দলটি স্থানীয় সরকারের নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের আগে সম্পন্ন করার আহ্বান জানিয়েছে।
ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, সংবিধানে “আল্লাহর প্রতি পরম আস্থা ও বিশ্বাস” রাষ্ট্রের অন্যতম মূলনীতি হিসেবে পুনঃস্থাপন করতে হবে। এর পাশাপাশি সমতা, মানব মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
দলের মতে, ইসলাম বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার মূল ভিত্তি এবং এটি সংবিধানে প্রতিফলিত হওয়া উচিত। ইসলাম ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিও জানানো হয়েছে।
ঘোষণায় আরও বলা হয়েছে, আগাম জাতীয় নির্বাচনের আগে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে স্থানীয় নির্বাচন করতে হবে। সংসদের জন্য প্রস্তাবিত উভয় কক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক (PR) নির্বাচনী ব্যবস্থা চালু করার দাবি জানানো হয়েছে।
দলটি একটি জুলাই সনদ ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়েছে, যা ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের চেতনাকে বাস্তবায়নে সহায়ক হবে। একই সঙ্গে একটি বৈষম্যমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে।
ঘোষণায় বলা হয়েছে, ভবিষ্যতের কোনো স্বৈরশাসক, দুর্নীতিবাজ, লুটপাটকারী বা জঙ্গি যাতে রাষ্ট্রক্ষমতা ব্যবহার করে জনগণের অধিকার হরণ করতে না পারে, সেজন্য রাষ্ট্র সংস্কার জরুরি।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং আগের সরকারের সময় সংঘটিত অপরাধগুলোর বিচার নিশ্চিত করারও দাবি জানানো হয়েছে। প্রবাসে পলাতক অপরাধীদের ফিরিয়ে আনতে কূটনৈতিক উদ্যোগ জোরদার করার আহ্বান জানানো হয়।
অবৈধ অর্থপাচার রোধে দৃশ্যমান ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দেয় দলটি। ভারতের সঙ্গে করা সকল চুক্তি প্রকাশের দাবি জানিয়ে বলা হয়েছে, যেসব চুক্তি জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী, তা বাতিল করতে হবে।
দলটি আরও জানিয়েছে, দুর্নীতিবাজ, ঋণ খেলাপি ও সন্ত্রাসীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে একটি ন্যায়সঙ্গত ও গ্রহণযোগ্য পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
ঘোষণাপত্রে নাগরিক হয়রানি, ঘুষ এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলাগুলোর অবসান দাবি করা হয়েছে। সেইসঙ্গে গুজব ও গণপিটুনির মতো অপরাধ প্রতিরোধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
শেষে দলটি দেশপ্রেমিক ও ইসলামপন্থী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামার আহ্বান জানায়, যাতে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষা করা যায়।