যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যকার কূটনৈতিক অচলাবস্থা আরও ঘনীভূত হচ্ছে। ইরানের সুপ্রিম লীডার আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ইরান নিজের মাটিতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাবে। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করল তেহরান।
খামেনি বলেন, “আমেরিকার উদ্ধত নেতারা আমাদের স্বার্থবিরোধী প্রস্তাব বারবার বিভিন্নভাবে উপস্থাপন করছে। এমন একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যা শতভাগ আমাদের স্বার্থের বিপরীত। আমাদের যদি একশটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রও থাকে, তবে তাতে কোনো লাভ নেই যদি আমাদের নিজস্ব জ্বালানি না থাকে। আমরা যদি নিজেরা পরমাণু জ্বালানি উৎপাদন না করতে পারি, তবে আমেরিকার দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে, আর তারা হয়তো ১০টি শর্ত দেবে জ্বালানি দেওয়ার জন্য।”
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসন একটি প্রস্তাব দেয় যাতে সীমিত সময়ের জন্য ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার কথা বলা হয়। যদিও এটি আপাতভাবে সমঝোতার পথ খুলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছিল, ইরান সে প্রস্তাবকেও গ্রহণ করেনি।
তেহরান যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান জানিয়েছে। ইরান বলেছে, “আমরা প্রথমেই আমেরিকা ও অন্য পক্ষগুলোকে বলি, এই পরমাণু ইস্যুতে তোমাদের কী আসে যায়? ইরানে সমৃদ্ধকরণ থাকবে কি না, সেটা নিয়ে হস্তক্ষেপের কোনো অধিকার তোমাদের নেই।”
সর্বোচ্চ নেতা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে সমৃদ্ধকরণ পুরোপুরি বন্ধ করতে বলছে, কিন্তু তারা জানিয়ে দিয়েছে, ইরান তার নিজস্ব মাটিতে এ কাজ চালিয়ে যাবে।
তবে, খামেনি আলোচনার পথ পুরোপুরি বন্ধ করেননি। তিনি সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবের বিস্তারিত উল্লেখ না করলেও বলেন, আলোচনার মাধ্যমে একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর চেষ্টা চলবে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্বাস রুপচি মঙ্গলবার জানান, “যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে অসংখ্য অস্পষ্টতা রয়েছে। এর মধ্যে স্বচ্ছতা নেই।”
এদিকে, ওমানের মধ্যস্থতায় এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া আলোচনা ইতোমধ্যে পাঁচ দফা সম্পন্ন হয়েছে। যদিও তেহরান ও ওয়াশিংটনের অবস্থান এখনো কাছাকাছি আসেনি, আলোচনার দরজা খোলা রেখেছে উভয় পক্ষই।