চীনের তৈরি দূরপাল্লার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হাতে পেয়েছে ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক একাধিক সূত্র এই তথ্য জানিয়েছে।
মিডল ইস্ট আইকে দেওয়া এক বক্তব্যে এক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরব কর্মকর্তা জানান, ইরান তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে তৎপর হয়েছে এবং এই সংক্রান্ত তথ্য যুক্তরাষ্ট্রকেও জানানো হয়েছে।
জুন মাসের ১৩ থেকে ২৪ তারিখ পর্যন্ত ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ হামলায় ইরানের আকাশসীমা ভেদ করে অভিযান পরিচালনা করা হয়। ইসরায়েলের স্টেলথ এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান এবং যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ বোমারু বিমান ইরানের অভ্যন্তরে অভিযান চালায়, যেখানে পুরোনো এফ-১৫ ও এফ-১৬ বিমান থেকে দূর থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানিয়েছে, ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন বন্ধ করতেই ভবিষ্যতে আরও হামলার পরিকল্পনা রয়েছে। এ প্রেক্ষাপটেই ইরানের প্রতিরক্ষা শক্তি বৃদ্ধি অগ্রাধিকার পাচ্ছে।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ইরানে দুটি চীনা পরিবহন বিমান অবতরণ করেছে, যা দেশটির যুদ্ধে সক্ষমতা বাড়াতে সরঞ্জাম সরবরাহের ইঙ্গিত দেয়। চীনের নজরদারি জাহাজও পারস্য উপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় সক্রিয় রয়েছে বলে জানা গেছে, যা ইরানকে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহে সহায়তা করছে।
ইরান আগে চীনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় খুব একটা অগ্রসর হয়নি। নতুন যুদ্ধবিমান ক্রয়ে তারা পিছিয়ে ছিল, যদিও প্রতিবেশী পাকিস্তান তুলনামূলকভাবে কম ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও চীনের সহায়তায় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিক করেছে।
ইরানের বিমানবাহিনী এখনো তীব্র ঘাটতির মুখে। নতুন যুদ্ধবিমান পরিচালনার জন্য পাইলট ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মী প্রশিক্ষণ দীর্ঘ সময়সাপেক্ষ। তবে যেসব ইরানি বাহিনী ইতোমধ্যে এস-৩০০ ও অন্যান্য আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় প্রশিক্ষিত, তাদের চীনা প্রযুক্তিতে রূপান্তর অনেক দ্রুত সম্ভব বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।
চীন-ইরান সম্পর্কের এ সামরিক দিকটি মধ্যপ্রাচ্যে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা জোরদার হওয়ায় ভবিষ্যতের হামলা পরিকল্পনায় ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রকে নতুন কৌশল নিতে হতে পারে।