যুক্তরাষ্ট্রের ‘শান্তিপূর্ণ’ পারমাণবিক স্থাপনায় সামরিক হামলার জবাবে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালী বন্ধ করতে পদক্ষেপ নিচ্ছে ইরান।
রবিবার ইরানের জাতীয় সংসদ (মজলিস) এই সিদ্ধান্তে ভোট গ্রহণ করে। ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সদস্য এসমাইল কোসারি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, “সংসদ সদস্যদের মধ্যে হরমুজ প্রণালী বন্ধের ব্যাপারে ঐকমত্য হয়েছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল।”
বিশ্বের মোট তেলের প্রায় ২০ শতাংশ সরবরাহ হয় হরমুজ প্রণালী দিয়ে, যা পারস্য উপসাগরের মুখে অবস্থিত। প্রতিদিন ১৭ থেকে ১৮ মিলিয়ন ব্যারেল তেল এই সরু জলপথ দিয়ে বহন করা হয়।
তেল ছাড়াও কাতার থেকে প্রচুর পরিমাণে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ হয় এই পথ দিয়ে, যা বিশ্বব্যাপী জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই প্রণালী মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান তেল উৎপাদনকারী দেশ—ইরান, সৌদি আরব, ইরাক, কুয়েত ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের জন্য একমাত্র সমুদ্রপথ যা পারস্য উপসাগরকে উন্মুক্ত মহাসাগরের সঙ্গে যুক্ত করে।
বিশ্লেষকরা অনেক আগে থেকেই সতর্ক করে আসছিলেন, হরমুজ প্রণালী বন্ধ হলে বৈশ্বিক তেলের দামে তাৎক্ষণিক ও বড় ধরনের উত্থান ঘটবে।
ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার আগে থেকেই বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছিলেন, যুদ্ধ পরিস্থিতি সমুদ্রেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
প্রেস টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কৌশলগত বিশ্লেষকরা জানান, এই হামলা মার্কিন প্রশাসনের জন্য ব্যয়বহুল হবে। বিশেষ করে যদি হরমুজ প্রণালী বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে বৈশ্বিক করপোরেশনগুলো কয়েক দিনের মধ্যেই কার্যক্রম স্থগিত করতে বাধ্য হবে।
তারা সতর্ক করেছেন, এই প্রণালী বন্ধ হলে প্রথম সপ্তাহেই তেলের দাম প্রায় ৮০ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে। কারণ বিকল্প পথগুলো ব্যবহার করা হলে পরিবহন খরচ বহুগুণ বেড়ে যাবে।