জুলাই গণহত্যার আন্তর্জাতিক মানের বিচার সম্পন্ন করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। শহীদ আবু সাঈদের হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে এই বিচার সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছেন সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।
বুধবার বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরে (বিআরইউআর) শহীদ আবু সাঈদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী ও জুলাই শহীদ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, “আমরা এমন একটি বিচার প্রক্রিয়া চালাতে চাই, যা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হবে। এই সরকারের মেয়াদেই আবু সাঈদ হত্যার বিচার দেখতে পাবেন সবাই।”
স্মরণসভাটি পরিচালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকত আলী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শহীদ আবু সাঈদের পিতা মো. মকবুল হোসেন। এছাড়া রংপুর অঞ্চলের আরও ২২ শহীদ পরিবারের সদস্য, উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ড. এসএমএ ফায়েজ, অধ্যাপক ড. তানজিমউদ্দিন খান এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের উপস্থিত ছিলেন।
স্মৃতিচারণ করে ড. নজরুল বলেন, “আবু সাঈদের মৃত্যুর ভিডিও দেখার পর আমি চুপ থাকতে পারিনি। বুক উঁচু করে, হাত মেলে যে তরুণ মৃত্যুবরণ করে, সে অন্যরকম প্রেরণার উৎস। তখন থেকেই প্রতিবাদের অধিকার জন্ম নেয়।”
তিনি বলেন, সাঈদের আত্মত্যাগ গণতান্ত্রিক ইতিহাসে অনন্য এবং তাঁর প্রেরণায় শত শত তরুণ আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে।
এর আগে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আবু সাঈদের জন্মস্থান নীলফামারীর বাবনপুর গ্রামে তাঁর কবর জিয়ারত করেন এবং ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
পরে তাঁর নামে একটি স্মারক গেট, জাদুঘর ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।
স্মরণ দিবসের কার্যক্রমে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, দোয়া মাহফিল এবং বিএনপি, জামায়াতে ইসলামি, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
স্মরণ সভায় ড. আসিফ নজরুল নীলফামারীতে একটি ‘হেলথ সিটি’ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনার কথাও জানান। তিনি বলেন, এটি রংপুর অঞ্চলে চিকিৎসাসেবা জোরদার করবে এবং বিদেশনির্ভরতা কমাবে।