হিমাচল প্রদেশের মাণ্ডি জেলায় জুন ৩০ এবং জুলাই ১-এর মধ্যবর্তী রাতে ঘটে যাওয়া ক্লাউডবার্স্টে পরিবার হারানো ১০ মাসের শিশু নীতিকা এখন তার খালার স্নেহেই বড় হচ্ছে। দেশ ও বিদেশ থেকে বহু মানুষ তাকে দত্তক নিতে আগ্রহ প্রকাশ করলেও, বাবার বোন তার দায়িত্ব নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সরকারি কর্মকর্তারা।
বাল সাব-ডিভিশনের ম্যাজিস্ট্রেট সমৃতিকা নেগি শনিবার জানান, নীতিকার খালা তারা দেবী তাকে নিজের মেয়ে বলেই পরিচয় দিচ্ছেন এবং স্পষ্ট করেছেন যে, দত্তক দেওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।
নীতিকার বাবা রমেশ কুমার জল প্রবাহ আটকানোর চেষ্টা করার সময় নিহত হন। মা রাধা দেবী ও দাদি পূর্ণু দেবী তাকে খুঁজতে গিয়ে নিখোঁজ হন। নীতিকাকে কান্নারত অবস্থায় খুঁজে পান প্রতিবেশী প্রেম সিং, যিনি পরে রমেশের চাচাতো ভাই বলবন্তের কাছে শিশুটিকে হস্তান্তর করেন। বলবন্ত সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জয় রাম ঠাকুরের নিরাপত্তা কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন।
এই হৃদয়বিদারক ঘটনার পর দেশজুড়ে মানুষ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। নেগি জানান, নীতিকার নামে হিমাচল কো-অপারেটিভ ব্যাংক ও পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকে দুটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। সেখানে জমা হওয়া অর্থ তার ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার পর শিক্ষার জন্য ব্যবহার করা যাবে।
বর্তমানে শিশুটি আত্মীয়দের সঙ্গেই আছে এবং তার সুরক্ষা ও ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে সবরকম পদক্ষেপ নিচ্ছে প্রশাসন।
শনিবার শিশুটির খোঁজখবর নিতে যান বিরোধী দলের নেতা জয় রাম ঠাকুর। তিনি জানান, একটি বেসরকারি এনজিও নীতিকার শিক্ষা দায়িত্ব নিতে চায় এবং এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে তার পরিবার।
ঠাকুর বলেন, “বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে বহু মৃত্যু হয়েছে। তবে একটি ছোট মেয়ের পুরো পরিবার হারানো—এটি অত্যন্ত মর্মান্তিক।”
তিনি শিশুদের জন্য চালু থাকা ‘মুখ্যমন্ত্রী সুখ আশ্রয় যোজনা’র আওতায় নীতিকার সহায়তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। এই যোজনার অধীনে রাজ্য সরকার এতিম ও আশ্রয়হীন শিশুদের পূর্ণাঙ্গ অভিভাবকত্ব নিয়ে থাকে।
এদিকে, এখনও পর্যন্ত ওই রাতে ঘটে যাওয়া ১০টি ক্লাউডবার্স্ট, আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে নিখোঁজ ২৭ জনকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। এতে এখন পর্যন্ত ১৫ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়েছে।