ছয় দশক আগে জাহাজে চড়ে মুম্বাই থেকে দুবাই পাড়ি দিয়েছিলেন ভারতীয় শিক্ষাবিদ হাজী এন জামালুদ্দিন। ১৯৬৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি, যখন শহরটি ছিল গড়ে ওঠার প্রাথমিক পর্যায়ে এবং কোন বন্দর বা নিয়মিত অভিবাসন প্রক্রিয়া চালু হয়নি, তখন পাসপোর্টে কোন প্রবেশের সিল ছাড়াই শহরে প্রবেশ করেছিলেন তিনি।
এতদিন পর, ৯১ বছর বয়সী এই বর্ষীয়ান প্রবাসী অবশেষে পেলেন সেই প্রতীকী প্রবেশ সিল, যা তাঁর দীর্ঘ প্রবাস জীবনের এক স্মরণীয় অধ্যায় হয়ে থাকবে। দুবাই এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষ এক বিশেষ উদ্যোগে এই সিল প্রদান করেছে।
হাজী জামালুদ্দিন, Crescent English High School এর প্রতিষ্ঠাতা, শিক্ষা ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ব্যাপকভাবে সম্মানিত। তাঁর পুত্র ডা. রিয়াজ জামালুদ্দিন চেয়েছিলেন বাবার জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়টিকে স্মরণীয় করে রাখতে। তাঁর অনুরোধে দুবাই এয়ারপোর্টের একটি দল উদ্যোগ নিয়ে হাজী জামালুদ্দিনের পাসপোর্টে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন প্রবেশ সিল প্রদান করে।
এ বিষয়ে হাজী জামালুদ্দিন বলেন, “এই নতুন সিল শুধুমাত্র একটি পাসপোর্টের ছাপ নয়, বরং দুবাই আমাদের পরিবারকে যা দিয়েছে, তার প্রতি এক গভীর কৃতজ্ঞতার নিদর্শন। আমার পুত্র চেয়েছিল দীর্ঘদিনের এই যাত্রার স্মারক হিসেবে এটি রাখতে। দুবাই এয়ারপোর্টের সহযোগিতায় সেটি সম্ভব হয়েছে।”
দুবাই এয়ারপোর্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ঘটনাকে তুলে ধরে লেখে, “তিনি ১৯৬৫ সালে সমুদ্রপথে দুবাইতে এসেছিলেন, যখন এখানে কোনো বন্দর ছিল না। সে সময় কোন অভিবাসন সিলও ছিল না। ‘Year of Community’ উপলক্ষে আমরা গর্বের সাথে তাঁর পাসপোর্টে এই সিল প্রদান করেছি। এটি এক সেবামূলক, বিনয়ী এবং আশাবাদী জীবনের উত্তরাধিকার উদযাপন।”
অন্যদিকে, হাজী জামালুদ্দিন এখনও মনে করেন, “শিক্ষাই হলো সর্বোত্তম আলো, যা মানব সমাজকে আলোকিত করে।”
এই ঘটনা আরও একবার প্রমাণ করে, প্রবাস জীবনের প্রতিটি অধ্যায় কতটা গভীরভাবে হৃদয়ে গেঁথে থাকে এবং একটি দেশের প্রতি ভালোবাসা কতটা আন্তরিক হতে পারে।