কলকাতার ইডেন গার্ডেনে শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা। ঘরের মাটিতে টেস্টে ভারতের আধিপত্য আরও পোক্ত করার মঞ্চ এটি, বিশেষ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে শুভমন গিলের নেতৃত্বে দারুণ পুনরাগমনের পর।
সিরিজ শুরুর আগেই পরিসংখ্যান বলছে, ঘরের মাটিতে টেস্টে ভারতের জয় ১২২, অস্ট্রেলিয়া ২৬২ এবং ইংল্যান্ড ২৪১ জয়ে এগিয়ে। যদিও গত বছর নিউজিল্যান্ডের হাতে ৩-০ হারের ধাক্কা পেয়েছিলো ভারত, এরপরই গত মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২-০ জয়ে ঘুরে দাঁড়ায় তারা।
গিলের নেতৃত্বে এটি ঘরের মাঠে দ্বিতীয় সিরিজ। ইংল্যান্ডে পাঁচ টেস্টে ২-২ ড্রয়ের পর দেশে ফিরে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসী ভারত দল এবার প্রোটিয়াদের মোকাবিলা করবে। ইডেনের উইকেট শুরুতে রিভার্স সুইং সাহায্য করতে পারে, ম্যাচ গড়ালে গতি কমতে পারে। গিল ইঙ্গিত দিয়েছেন ব্যাট বলের লড়াইকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখতে চান, অতিরিক্ত টার্নিং ট্র্যাক নয়।
ভারত দলে বড় খবর রিশভ পন্তের ফেরা। পা ভাঙার চোটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ মিস করার পর তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা এ দলের বিপক্ষে দুই চারদিনের ম্যাচে ভারত এ-কে নেতৃত্ব দিয়ে ছন্দে ফিরেছেন। ব্যাকআপ উইকেটকিপার ধ্রুব জুরেল দক্ষিণ আফ্রিকা এ-র বিপক্ষে একই ম্যাচে জোড়া সেঞ্চুরি করে ব্যাটার হিসেবে শক্ত দাবি তুলেছেন। দলের সহকারী কোচ রায়ান টেন ডুশাতে বলেন, জুরেলকে এই টেস্টে বাদ দেওয়া কঠিন হবে, শেষ পর্যন্ত সেরা কম্বিনেশনই ঠিক করবে একাদশ।
ডব্লিউটিসি ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে শিরোপা জেতা দক্ষিণ আফ্রিকা পাকিস্তানে ১-১ ড্র করে ভারতে এসেছে। অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার নেতৃত্বে এই দলকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই, যদিও ভারত সফরে খেলবে এমন কয়েকজনের অভিষেক ঘটতে পারে। প্রোটিয়া কোচ শুক্রি কনরাড ইডেন গার্ডেনে সাংবাদিকদের বলেন, কেশব মহারাজ, সাইমন হার্মার ও সেনুরান মুথুসামি নিয়ে তাদের স্পিন প্যাক আগের চেয়ে শক্তিশালী, যা দলকে আত্মবিশ্বাসী করছে। তার ভাষায়, ইডেন ও ভারতে নিজেদের ইতিহাস তৈরির স্বপ্ন দেখছেন তারা।
দক্ষিণ আফ্রিকার ১৫ জনের স্কোয়াডে আটজনেরই ভারতে আগে টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা নেই। অভিজ্ঞতার বিচারে বাভুমা, ওপেনার আইডেন মার্করাম ও পেস spearhead কাগিসো রাবাদা ভারতীয় কন্ডিশন বেশি বোঝেন। ২০১৯ ট্যুরে ছিলেন জুবায়ের হামজা ও মুথুসামি, ২০১৫-তে খেলেছিলেন হার্মার। সাম্প্রতিক অতীতে ভারতের মাটিতে প্রোটিয়াদের রেকর্ড ভালো নয়, আগের দুই সিরিজেই তারা ৩-০ ব্যবধানে হেরেছে। সর্বশেষ সিরিজ জিতেছিল ২০০০ সালে হ্যান্সি ক্রোনিয়ের অধীনে।
ভারতের ব্যাটিং লাইনআপে গিল নিজেই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি করেছিলেন ৭৫৪ রান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে অপরাজিত ১২৯ করে জিতিয়েছেন দলকে। সিনিয়রদের অবসর পর্বের পর দলে তার অবস্থান আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়েছে। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট হবে গuwahatiতে ২২ নভেম্বর থেকে, এরপর তিনটি ওয়ানডে ও পাঁচটি টিটোয়েন্টি খেলবে দুই দল।
প্রথম টেস্টে ব্যাট ও বলের ভারসাম্যপূর্ণ উইকেটে গিলের আক্রমণাত্মক কিন্তু বুদ্ধিদীপ্ত ক্রিকেট আর কনরাডের স্পিন পরিকল্পনা, এই দুইয়ের লড়াইয়ে সিরিজের সুর ঠিক হতে পারে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
