রাশিয়া-ভারত-চীন (রিক) ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতা প্রক্রিয়ার পুনরুজ্জীবন নিয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি ভারত। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত এক সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “এই পরামর্শমূলক প্ল্যাটফর্মটি হলো এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে তিন দেশ বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। তবে এই মুহূর্তে রিক বৈঠকের তারিখ বা সময়সূচি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি তিন দেশের পারস্পরিক সুবিধামতো আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা হবে।”
রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রেই রুডেনকো রাশিয়ার একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমরা রিক পুনরায় চালু করার আশা করছি এবং এ নিয়ে বেইজিং ও দিল্লির সঙ্গে আলোচনা চলছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই ফোরামটি কার্যকর হলে তা গুরুত্বপূর্ণ হবে, কারণ ভারত, চীন ও রাশিয়া শুধু গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদারই নয়, একইসঙ্গে ব্রিকসের প্রতিষ্ঠাতা দেশও।”
রাশিয়ার এ মন্তব্যের জবাবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান জানান, “তিন দেশের মধ্যে সহযোগিতা শুধু তাদের স্বার্থেই নয়, বরং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। চীন রাশিয়া ও ভারতের সঙ্গে সংলাপে প্রস্তুত রয়েছে।”
এদিকে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত রিক বৈঠক আয়োজনের বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি।
গত মাসে মস্কোতে এক থিংক ট্যাংক অনুষ্ঠানে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, “গত কয়েক বছর ধরে রিক বৈঠকগুলো স্থগিত ছিল, প্রথমে কোভিড মহামারির কারণে এবং পরে ভারত-চীন সীমান্ত উত্তেজনার ফলে। তবে বর্তমানে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে এবং আমরা আশা করছি রিক আবার সক্রিয় হবে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, তিন পরাশক্তির মধ্যে ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতা শুধু অর্থনৈতিক নয়, কৌশলগত ভারসাম্য বজায় রাখার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। তবে সীমান্ত সংক্রান্ত উত্তেজনা পুরোপুরি প্রশমিত না হলে এর বাস্তবায়ন দীর্ঘসূত্রতা পেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।