রাশিয়ান তেল ক্রয় নিয়ে ন্যাটো সেক্রেটারি জেনারেল মার্ক রুটের হুঁশিয়ারির জবাবে ভারত স্পষ্ট জানিয়েছে, দেশের জ্বালানি ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বাজার পরিস্থিতি এবং জাতীয় স্বার্থকে সামনে রেখে। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “এই বিষয়ে আমরা সংবাদ প্রতিবেদন দেখেছি এবং ঘটনাপ্রবাহ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের জনগণের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা যা পাচ্ছি এবং বৈশ্বিক পরিস্থিতি যেমন আছে, তা বিশ্লেষণ করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই প্রেক্ষাপটে আমরা দ্বৈত মানদণ্ড সম্পর্কে বিশেষভাবে সতর্ক করছি।”
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউক্রেন যুদ্ধের পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর ভারত, চীন ও ব্রাজিল ছাড়ের দামে রাশিয়ান জ্বালানি আমদানি বৃদ্ধি করেছে। এই তিন দেশই ব্রিকস জোটের সদস্য।
এ প্রেক্ষিতে রুটে সতর্ক করে বলেন, “আপনি যদি এখন বেইজিং, নয়াদিল্লি বা ব্রাজিলিয়ায় থাকেন, তাহলে আপনাকে ভেবে দেখতে হবে, এই বিষয়টি আপনাদের ওপর কতটা প্রভাব ফেলতে পারে। এটি ভারীভাবে আঘাত করতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “আমার আহ্বান হচ্ছে, দয়া করে ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোন করে বলুন, তিনি যেন শান্তি আলোচনায় গুরুত্ব দেন। না হলে এর প্রতিক্রিয়া ব্রাজিল, ভারত ও চীনের ওপর ফিরে আসবে।”
রুটের মন্তব্যের পাশাপাশি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার হুঁশিয়ারি দেন, যদি পুতিন ৫০ দিনের মধ্যে ইউক্রেনের সঙ্গে কোনো শান্তিচুক্তিতে না আসেন, তাহলে রাশিয়ার ওপর কঠিন বাণিজ্যিক বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে।
ট্রাম্প আরও বলেন, “আমরা রাশিয়ার ওপর খুবই কড়া শুল্ক আরোপ করব, যদি ৫০ দিনের মধ্যে কোনো চুক্তি না হয়।”
ট্রাম্প পূর্বেও ব্রিকস সদস্য দেশগুলোর বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন, যা মার্কিন বাজারে ব্রিকস পণ্যের প্রবেশে বাধা তৈরি করতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে ভারত তার অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে, ইউক্রেন সংকটের সমাধান যুদ্ধক্ষেত্রে নয়, বরং সংলাপ ও কূটনীতির মাধ্যমে আসতে হবে। নয়াদিল্লির ভাষ্য, অস্ত্রের ছায়ায় কখনোই স্থায়ী সমাধান আসতে পারে না।
২০২২ সাল থেকে রাশিয়ান ছাড়মূল্যের তেল আমদানিতে উল্লেখযোগ্যভাবে ভারতীয় নির্ভরতা বেড়েছে। বর্তমানে মস্কো ভারতের শীর্ষ দুই জ্বালানি সরবরাহকারীর মধ্যে রয়েছে।