রাশিয়ান তেল আমদানি ও পরিশোধন নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের চাপকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ভারতের জন্য জ্বালানি নিরাপত্তা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার এবং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার ওপর ১৮তম ধাপের নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় ভারতের একটি রিফাইনারিকেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে rt.com।
বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে মিশ্রি বলেন, “বিশ্বের সামগ্রিক জ্বালানি পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা থাকা জরুরি। আমরা আগে থেকেই বলে আসছি, দ্বিমুখী নীতি গ্রহণযোগ্য নয়। কে কোথা থেকে জ্বালানি পায় এবং কখন কার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, তা বুঝে ব্যবস্থা নিতে হবে।”
এদিন রয়টার্স একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ভারতের ওই রিফাইনারি থেকে দুটি ট্যাংকার নির্ধারিত সময়ে জ্বালানি তোলেনি।
বিক্রম মিশ্রি আরও বলেন, “আমরা বুঝি যে ইউরোপ একটি গুরুতর নিরাপত্তা সংকটের মুখোমুখি, তবে বিশ্বের অন্যান্য অংশেও জীবন-মরণ সমস্যা রয়েছে। এ বিষয়ে ভারসাম্য ও বাস্তবতা বিবেচনায় রাখা জরুরি।”
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়া ভারতের প্রধান তেল সরবরাহকারী হয়ে উঠেছে। বর্তমানে ভারতের মোট অপরিশোধিত তেলের প্রায় ৪০ শতাংশই আসে রাশিয়া থেকে।
অন্যদিকে, ২০২৩ সাল থেকে ভারত ইউরোপে পরিশোধিত জ্বালানি রপ্তানিতে বড় অংশীদার হয়ে উঠেছে। এ কারণে রাশিয়ার তেল পরিশোধন কার্যক্রমে ভারতের ভূমিকা বৈশ্বিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই নিষেধাজ্ঞা প্রয়াস ভারত-ইইউ সম্পর্কের ওপর চাপ ফেলতে পারে। তবে ভারতের পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তারা জাতীয় স্বার্থে কোন আপস করতে রাজি নয়।