প্রবল বর্ষণ ও বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ভারত ও পাকিস্তানের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। গত দুই মাস ধরে টানা ভারী বর্ষণ ও হঠাৎ বন্যায় দুই দেশের বিভিন্ন রাজ্যে জনজীবন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে।
ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি, জম্মু-কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে টানা বৃষ্টিতে আকস্মিক বন্যা, ভূমিধস, জলাবদ্ধতা ও ক্লাউডবার্স্টের ঘটনা ঘটছে।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর (আইএমডি) জানিয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে। ইতিমধ্যেই পাঞ্জাবের প্রায় ১ হাজার গ্রাম পানিতে ডুবে গেছে। রাজ্য সরকারের তথ্য অনুযায়ী, মোট ১ হাজার ৩১২টি গ্রাম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্তত ৬ হাজার ৫৮২ জনকে ১২২টি ত্রাণশিবিরে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
গত মাসে রাজ্যজুড়ে বন্যায় অন্তত ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আড়াই লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী এই পরিস্থিতিকে কয়েক দশকের মধ্যে অন্যতম ভয়াবহ বন্যা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কৃষি নির্ভর এই অঞ্চলের প্রায় ৯৪০ বর্গকিলোমিটার আবাদি জমি প্লাবিত হয়েছে, ফলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, জুন থেকে এখন পর্যন্ত দেশজুড়ে বন্যা ও বর্ষণজনিত দুর্ঘটনায় ১ হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
অন্যদিকে, পাকিস্তানেও প্রবল বর্ষণ ও বন্যায় ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ) জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ৮৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হয়েছে এক হাজার ১৭৬ জন।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাঞ্জাব প্রদেশ, যেখানে ২২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৬৪৮ জন আহত হয়েছে। খাইবার পাখতুনখোয়ায় ৪৮ জন নিহত এবং ৩৫৯ জন আহত হয়েছেন। সিন্ধু প্রদেশে প্রাণহানি হয়েছে ৫৮ জনের।
এনডিএমএ জানায়, এ পর্যন্ত ৮ হাজার ২০৬টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং অন্তত ৬ হাজার ১৮০টি গবাদি পশু মারা গেছে।
পাঞ্জনদ এলাকায় ৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বন্যার পানি জমতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পিডিএমএ মহাপরিচালক ইরফান আলী কাঠিয়া। তবে আগের ধারণার তুলনায় পানির পরিমাণ কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পাকিস্তান জুড়ে এখন পর্যন্ত ২৪ লাখেরও বেশি মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৯ লাখের বেশি মানুষ ও ৬ লাখেরও বেশি গবাদি পশু নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।