ভারত সরকার পারমাণবিক দুর্ঘটনার জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদানের একটি তহবিল গঠনের পরিকল্পনা করছে। তহবিলটি ১৫ বিলিয়ন রুপি (প্রায় ১৬৯ মিলিয়ন ডলার) এর বেশি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হবে, যা পারমাণবিক প্ল্যান্ট অপারেটরদের উপর নির্ধারিত সীমার বাইরে হবে।
দুইজন সরকারি সূত্র জানিয়েছেন, নতুন তহবিলটি বৈদেশিক সরবরাহকারী ও প্রাইভেট কোম্পানিগুলোর ঝুঁকি ভাগাভাগি সংক্রান্ত উদ্বেগ দূর করতে সাহায্য করবে। সূত্রগুলো বলেছে, এটি ভারতীয় ক্ষতিপূরণ কাঠামোকে আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য করবে এবং দীর্ঘদিন স্থগিত থাকা প্রাইভেট ও বৈদেশিক বিনিয়োগকে আকর্ষণ করবে।
এই তহবিল নতুন পারমাণবিক শক্তি বিলের আওতায় আইনগতভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে। এটি বিদ্যমান অস্থায়ী ক্ষতিপূরণ ব্যবস্থার পরিবর্তে একটি স্থায়ী কাঠামো হিসেবে কাজ করবে।
ভারতের পারমাণবিক শক্তি বিভাগ, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত কোনো মন্তব্য করেনি।
দেশটি ২০৪৭ সালের মধ্যে পারমাণবিক শক্তি উৎপাদন ১২ গুণ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে দেশটি দশকের পুরনো রাষ্ট্র একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ এবং সীমাহীন দায়বদ্ধতার বিধান নরম করছে, যাতে প্রাইভেট অংশগ্রহণ এবং বৈদেশিক প্রযুক্তি সরবরাহকারীকে আকৃষ্ট করা যায়।
কিছু বড় ভারতীয় সংস্থা যেমন টাটা পাওয়ার, আডানি পাওয়ার এবং রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ বিনিয়োগ পরিকল্পনা তৈরি শুরু করেছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার শীতকালীন সংসদ অধিবেশনে বিলটি আনা প্রক্রিয়ার শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এই আইন প্রাইভেট কোম্পানিগুলিকে পারমাণবিক শক্তি উৎপাদন এবং ইউরেনিয়াম খনিতে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করবে, যেখানে বৈদেশিক অংশীদাররা পারমাণবিক প্ল্যান্টে সংখ্যালঘু অংশগ্রহণ নিতে পারবে।
নতুন তহবিল অপারেটরের সীমার বাইরে ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য একটি স্পষ্ট আইনি কাঠামো প্রদান করবে। বর্তমানে ভারত পারমাণবিক দুর্ঘটনার বিমা কভারেজের জন্য ২০১৫ সালে চালু করা পারমাণবিক বিমা পুলের ওপর নির্ভর করছে, যা আইনগতভাবে অন্তর্ভুক্ত নয়।
নতুন বিল অনুমোদিত হলে এটি ১৯৬২ সালের পারমাণবিক শক্তি আইন এবং ২০১০ সালের পারমাণবিক ক্ষতিপূরণ আইনের স্থলাভিষিক্ত করবে।